নাটোরের লালপুর উপজেলার কেশবপুর গ্রামে খলশিডাঙ্গা নদীর পাড় ভাঙন রোধে কোটি টাকা ব্যয়ে গাইড ওয়াল নির্মাণ করেছিল বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। তবে নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার ও রড-সিমেন্ট কম দেওয়ায় পাঁচ মাসের মধ্যেই ওয়ালে ফাটল ও ধস দেখা দিয়েছে। এতে ওই এলাকার দুইশ পরিবার নদী ভাঙনের শঙ্কায় রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের গাফিলতি ও যোগসাজশের কারণে এমন দুরবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। গাইড ওয়াল ও সড়কের মাঝে ফাঁকা জায়গা ভরাটের জন্য নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, বর্ষা শুরু হলে ক্ষতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নদীতে অস্থায়ী বাঁধ দিয়ে পানি সেচের মাধ্যমে খননযন্ত্র (ভেকু) ব্যবহার করে অবৈধভাবে মাটি তোলা হচ্ছে এবং সেটি ওয়াল ও সড়কের ফাঁকা জায়গায় দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে কেশবপুর গ্রামের আঞ্চলিক রাস্তা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে এবং বাড়িঘরও ভাঙনের শঙ্কায় রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আকরাম আলী ও মাহফুজুর রহমান জানান, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার আমলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও বিএমডিএ প্রকৌশলীদের যোগসাজশে অনিয়ম করে এসব কাজ করা হয়। কাজের কিছুদিন পরই সেটি বন্ধ হয়ে যায়। এতে নদী ভাঙন বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি রাস্তা বিলীন হয়ে গেছে। তারা দ্রুত ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার গোলাপ আলী জানান, এই প্রকল্পে কাজটি বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ঠিকাদার দ্বারা সম্পন্ন করা হয়েছে। বাইরে থেকে মাটি কেনা সম্ভব না হওয়ায়, প্রকৌশলীর নির্দেশনা অনুযায়ী নদী থেকে মাটি উত্তোলন করে ব্যবহার হচ্ছে।
বিএমডিএর বড়াইগ্রাম জোনের লালপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী আবুল বাসার জানান, গত বর্ষায় সময় স্বল্পতার কারণে ওয়ালের ব্যাক সিলিংয়ে মাটি দেওয়া হয়নি, যা বর্তমানে দেয়া হচ্ছে। সরকারি প্রকল্পের জন্য নদী থেকেই মাটি সংগ্রহ করা হচ্ছে। ওয়ালের কিছু মাটি সরার ফলে ফাটল দেখা দিয়েছে। তবে এসব প্রকল্পের বরাদ্দ কত সেটা জানা নেই।
এ বিষয়ে বিএমডিএর বড়াইগ্রাম জোনের সহকারী প্রকৌশলী তরিকুল ইসলাম বলেন, এসব বিষয় সরাসরি উপসহকারী প্রকৌশলী দেখে থাকেন, তাই তিনিই এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবেন। তবে অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একুশে সংবাদ / না.প্র/এ.জে