দ্বীপ জেলা ভোলার মানুষ আর চুপ থাকতে চায় না। স্বাধীনতা-পরবর্তী দীর্ঘ সময় ধরে নানা বঞ্চনা ও বিমাতাসুলভ আচরণের শিকার হয়ে এবার নিজের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হয়েছে তারা। পর্যটন ও শিল্পাঞ্চলের বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও ভোলায় আজও কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি। এমনকি পদ্মা সেতু নির্মাণেও ভোলা থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় উপেক্ষিত বোধ করছে এখানকার মানুষ। এ প্রেক্ষাপটে আবারও ৬ দফা দাবি নিয়ে মাঠে নামছে `আমরা ভোলাবাসী` নামের একটি সংগঠন।
মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি তাদের কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। সেখানে বলা হয়, আগামী শনিবার (২৪ মে) ‘আমরা ভোলাবাসী’র ব্যানারে ৬ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ভোলা ইন্ট্রাকো-সুন্দরবন গ্যাস সরবরাহ কেন্দ্র ঘেরাও ও পদযাত্রা কর্মসূচি পালিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর। তিনি বলেন, “দ্বীপ জেলা ভোলা গ্যাসসমৃদ্ধ এলাকা। এই গ্যাস জাতীয় সম্পদ, যা সারা দেশের উন্নয়নে ব্যবহৃত হতে পারে। তবে ভোলার গ্যাস আগে ভোলাবাসীর প্রাপ্য। অথচ দুর্ভাগ্যজনকভাবে স্থানীয়দের চাহিদা পূরণ না করেই ঢাকাসহ অন্যত্র সরবরাহ করা হচ্ছে। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

তিনি আরও বলেন, সরকার প্রাথমিকভাবে ভোলা সদর ও বোরহানউদ্দিন পৌর এলাকায় প্রায় ৫০ কিলোমিটার এলাকায় গ্যাস পাইপলাইন স্থাপন করে। সেখানে অন্তত ২০ হাজার পরিবারকে সংযোগ দেওয়ার সুযোগ থাকলেও মাত্র ২ হাজার ৩৫টি সংযোগ দিয়ে কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ অবস্থার জন্য তিনি তৎকালীন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের `চক্রান্ত ও দুর্নীতি`কে দায়ী করেন।
তিনি বলেন, “সরকারি প্রতিষ্ঠান সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির কাছ থেকে ইন্ট্রাকো মাত্র ১৭ টাকা দরে গ্যাস কিনে ঢাকায় ৪৭ টাকায় বিক্রি করছে। অথচ ভোলার একটি সিরামিক কারখানা ৩০ টাকায় গ্যাস কিনছে। এই বৈষম্যমূলক চুক্তি বাতিল করতে হবে।”
সংগঠনের ৬ দফা দাবিগুলো হলো:
১. ভোলার প্রতিটি ঘরে গ্যাস সংযোগ প্রদান
২. সরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও ২৫০ শয্যার হাসপাতাল আধুনিকায়ন
৩. ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণ
৪. গ্যাসভিত্তিক সার কারখানা ও ইপিজেড স্থাপন
৫. নদীভাঙন থেকে ভোলাকে স্থায়ীভাবে রক্ষা
৬. পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ভোলা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রাইসুল আলম, ভোলা জেলা বিজেপির সভাপতি আমিরুল ইসলাম রতন, জেলা সুজন সভাপতি মোবাশ্বের উল্লাহ চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির মাস্টার মো. জাকির হোসাইন, সংগঠনের সদস্য সচিব মীর মোশাররফ হোসেনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
একুশে সংবাদ/ভো.প্র /এ.জে