কোটচাঁদপুরে সক্রিয় বিকাশ ও নগদ হ্যাকাররা। ভাতাভোগীদের কাছে ফোন করে চাচ্ছেন পিন নাম্বার। বেকায়দায় পড়ে অফিসে ছুটছেন তারা। কোনো প্রকার তথ্য না দিতে ভাতাভোগীদেরকে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সমাজসেবা কর্মকর্তা বশির আহম্মেদ।
জানা যায়, কোটচাঁদপুর উপজেলায় ১৩ হাজার ৫৫৫ জন ভাতাভোগী রয়েছেন। তিন মাস পর পর মোবাইলে তাদেরকে দেয়া হয় ভাতার টাকা। আর এ টাকা দেয়ার সময় হলেই সক্রিয় হয়ে ওঠেন বিকাশ ও নগদ হ্যাকাররা। ফোন করে ভাতাভোগীদের কাছে চাচ্ছেন পিন নাম্বার। না দিলে ভাতা বন্ধ করে দেয়ার হুমকিও দেয়া হচ্ছে তাদের।
এদের একজন কোটচাঁদপুর তালসার গ্রামের আব্দুল সাত্তার। তিনি বলেন, আমার মা আমেনা খাতুন। ওনার নতুন করে বিধবা ভাতার কার্ড হয়েছে। সোমবার রাতে হঠাৎ করে ফোন আসে 09638970688 নাস্বার থেকে। বলেন,আমি সমাজসেবা অফিস থেকে বলছি। আপনি আপনাদের মোবাইলের পিন নাম্বারটা দেন। আপনার মায়ের টাকা এসেছে, পিন দিলে টাকা পাবেন।
একই ভাবে ওই নাম্বার থেকে ফোন করেন তালসার গ্রামের আকিমুল ইসলাম সাজুর কাছে। তিনি বলেন, রাত তখন ৯টা বাজে। ওই নাম্বার থেকে ফোন করে বলেন আপনি কি ওয়াদুদ ভুইয়া বলছেন। আমি সমাজসেবা অফিস থেকে বলছি। আপনার নামে টাকা এসেছে। পিন নাম্বার দিলে টাকা দিতাম আপনাদের।
ভাতাভোগী ধীরেন দাস বলেন, আমার নতুন ভাতা হয়েছে। তবে এর আগে আমার ছেলের প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা তারা তুলে নিয়েছিল। সে কারণে আমি বুঝতে পেরে নাম্বার কেটে দিই। এরপর বিষয় জানতে সকালে অফিসে আসি।
তিনি বলেন, ঘটনাটি জানার পর ওনারা কোনো প্রকার তথ্য লেনদেন না করতে পরামর্শ দিলেন। তিনি বলেন, মঙ্গলবার সকালে 09638231028 নাম্বার থেকে ফোন করেন। আর এভাবে একাধিক ভাতাভোগীর কাছে ফোন করে পিন নাম্বার চাচ্ছেন হ্যাকাররা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বশির আহম্মেদ। তিনি বলেন, এ উপজেলায় মোট ১৩ হাজার ৫৫৫ জন ভাতাভোগী রয়েছেন। যার মধ্যে বয়স্ক ভাতা পান ৬ হাজার ২০৬ জন, বিধবা ২ হাজার ৯ ৭০ জন, প্রতিবন্ধী-৪ হাজার ৩৭৯ জন।
যাদেরকে আমরা তিন মাস পর পর ভাতার টাকা দিয়ে থাকি। আর এ টাকা দেবার সময় হলেই হ্যাকারা সক্রিয় হয়ে উঠেন।
তিনি বলেন, আজ সকাল থেকে ৭-৮ জন ভাতাভোগীর অভিযোগে জানতে পেরেছি হ্যাকাররা টাকা নিতে তাদের কাছে পিন নাম্বার চান। তারা পিন নাম্বার না দিয়ে অফিসে আসেন।
তিনি আরও বলেন, ভাতাভোগীদের যারা হ্যাকারের কবলে পড়েন, তাদেরকে নাম্বার ও পিন নাম্বার পরিবর্তন করার পরামর্শ দেন। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে থানায় জিডি করতেও পরামর্শ দেয়া হয় ভাতাভোগীদের।
কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন মাতুব্বর বলেন, এখনো পর্যন্ত থানায় কোনো জিডি বা অভিযোগ হয়নি। তবে এ ধরনের অভিযোগ নিয়ে প্রায়ই ভুক্তভোগীরা আসেন। এ সব নিয়ে এর আগে অনেক জিডিও আছে থানায়।
একুশে সংবাদ/ঝি.প্র/এ.জে
একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
