বয়সভাতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন কোটচাঁদপুর উপজেলার কুশনা ইউনিয়নের ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধা আমিনা খাতুন। তবে জাতীয় পরিচয়পত্রে তাঁর বয়স দেখানো হয়েছে মাত্র ৫২ বছর, যার ফলে বন্ধ হয়ে গেছে তার বয়স্ক ভাতা। কে এই ভুলের জন্য দায়ী—তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট জবাব মেলেনি।
জানা গেছে, আমিনা খাতুন ২০১৮ সালে বয়স্ক ভাতার আওতায় আসেন এবং পরবর্তী তিন বছর নিয়মিত ভাতা উত্তোলন করেন। ২০২১ সালের দিকে হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় তার ভাতা। পরিবার জানায়, প্রকৃত বয়স ৯০ হলেও জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্মতারিখ দেওয়া হয়েছে ১০ সেপ্টেম্বর ১৯৭২, যা অনুযায়ী বয়স দাঁড়ায় মাত্র ৫২ বছর।
তার ছেলে আফজাল হোসেন বলেন, “আমরা আট ভাইবোন। আমার বড় ভাইয়ের বয়স ৭৫, অন্য ভাইবোনদের বয়সও অনেক বেশি। সেখানে আমাদের মায়ের বয়স কীভাবে ৫২ হলো, সেটা বুঝে উঠতে পারছি না। চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ অনেকের কাছে গিয়েছি, কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “ভাতা বন্ধ হওয়ার পর সমাজসেবা অফিসে গিয়েছিলাম। তারা জানায়, বয়স যতই হোক, ভোটার আইডিতে বয়স কম থাকায় ভাতা বন্ধ হয়েছে।”
এ বিষয়ে কুশনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহারুজ্জামান সবুজ বলেন, “ঘটনাটি আমার জানা ছিল না। কেউ আমার কাছে এই বিষয়ে আসেনি। খোঁজ নিয়ে দেখব।”
কোটচাঁদপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বশির আহম্মেদ বলেন, “২০১৮ সালের আগে অনেক ভাতা কার্ড চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সুপারিশে বয়স কমিয়ে করে দেওয়া হতো। ২০২১ সালের পর থেকে ডিজিটাল সিস্টেম চালু হওয়ায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভাতা বন্ধ হয়ে গেছে। এখন বয়স না হলে কার্ডটি সফটওয়্যার অটো বাতিল করে দেয়।”
তিনি আরও বলেন, “এখন কার্ড চালু করতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্রে সঠিক জন্মতারিখ সংশোধন করতে হবে। সংশোধনের পরই পুনরায় ভাতা চালু করা সম্ভব হবে।”
ভাতা বন্ধের জন্য দায়ী কে—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “ভোটার তালিকা তৈরির সময় যারা ভুল জন্মতারিখ দিয়েছেন, তারাই দায়ী।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগী পরিবারটি বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
একুশে সংবাদ/ঝি.প্র/এ.জে