চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হাইদচকিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুনব বড়ুয়া ও অন্যান্য শিক্ষকের ওপর স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা চৌধুরী রাশেদুল আবেদীন মাহমুদ (রাশেদ চৌধুরী) কর্তৃক হামলার ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে বিদ্যালয় সামনের সড়কে তারা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
সমাবেশে বক্তারা হামলাকারীর কঠোর শাস্তি দাবি করে বলেন, রাশেদ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আফতাব উদ্দিন চৌধুরীর ভাতিজা ও বর্তমান স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হলেও দীর্ঘদিন ধরে বেপরোয়া আচরণ করে আসছেন। অন্যান্য বখাটেরা পালিয়ে গেলেও তিনি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়িয়ে শিক্ষকদের ওপর হামলা চালাচ্ছেন, যা প্রশাসনের ব্যর্থতার স্পষ্ট প্রমাণ।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন শিক্ষক নেতা সৈয়দ মুহাম্মদ ইউছুপ, কামরুল হায়দার, ফোরকান উদ্দিন মান্নান, সৈয়দ আজগর, সৈয়দ নুরুল হুদা, গোবিন্দ দাস, শহিদ স্যার, আবু তৈয়ব ও আলমগীর। অভিভাবক ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য দেন নাজমুল হক লিটন। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জসিম উদ্দিন, রতন কান্তি চৌধুরী, মাওলানা মাহতাব উদ্দিন ও আহমদ আল মামুন সিকদার। বর্তমান শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন অতুল বড়ুয়া।
বক্তারা বলেন, “শিক্ষকদের ওপর হামলা মানে শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর হামলা। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং দ্রুত বিচার দাবি করছি।” তারা আরও উল্লেখ করেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এসময় শিক্ষার্থীরা রাশেদ চৌধুরীর শাস্তির দাবিতে স্লোগান দেন, যা পুরো বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ প্রকম্পিত করে তোলে।
ঘটনার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক চৌধুরী তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে জানান, “হাইদচকিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সিভিল সার্জনের সহযোগিতায় চিকিৎসা শুরু হয়েছে।” বর্তমানে আহত প্রধান শিক্ষক মৃত্যুশয্যায় চিকিৎসাধীন, যা নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ফটিকছড়ি থানার সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) রাজ্জাক জানান, বিদ্যালয়ে এসে বিভিন্ন বিষয়ে অন্যায় হস্তক্ষেপ ও সম্পদ জবরদখল নিয়ে প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষকের সঙ্গে রাশেদের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তিনি প্রধান শিক্ষকসহ আরও দুই শিক্ষককে কিল-ঘুষি মেরে আহত করেন। পরে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। তার বিরুদ্ধে মামলা নং ৭ (১২/৮/২৫) দায়ের করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/চু.প্র/এ.জে