শেরপুর জেলার সদর উপজেলায় চলতি রবি মৌসুমে ভুট্টা চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে, যা স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক আনন্দ ও আশার সঞ্চার করেছে ৷
কম খরচে অধিক ফলন এবং অন্য ফসলের তুলনায় লাভজনক হওয়ায় ভুট্টার আবাদ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এছাড়া পরিবেশ ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আবাদ ভালো হয়েছে। বিঘাপ্রতি ভুট্টা চাষে ১৫-১৬ হাজার টাকা খরচ করে ৫৫ থেকে ৬০ মণ ভুট্টার ফলন হয়েছে। এতে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে।
শেরপুর সদর উপজেলার কামারেরচর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে অন্যান্য ফসলের চেয়ে ভুট্টা চাষ করে বেশি লাভবান হচ্ছেন তারা। এ জন্য অন্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা। এখন ভুট্টা কাটা মাড়াইয়ের কাজ চলছে পুরোদমে। ভালো দাম পেয়ে সাধারণ কৃষকের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে।
লতারিয়া গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন ও উবাইদুল ইসমাম জানান, গত কয়েক বছর ধরে ভুট্টার আবাদ করছি। প্রতি বিঘা জমিতে ৫৫ থেকে ৬০ মণ ফলন হয়ে থাকে। খরচ কম ও লাভজনক হওয়ায় আরো বেশি জমিতে ভুট্টা চাষের পরিকল্পনা রয়েছে।
সন্ন্যাসীরচর গ্রামের মোতালেব জানান, প্রতি বিঘা জমিতে ৫৫-৬০ মণ ভুট্টা হয়েছে। প্রতি মণ ভূট্টা (ভেজা) ৯’শ থেকে ৯’শ ২০ টাকা। আর শুকনো ভুট্টা ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ১১’শ ৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। যার কারণে আগ্রহ বেড়েছে ভুট্টা চাষে।
লতারিয়ার হেলাল বলেন, এ বছর আমাদের চরাঞ্চলে অন্য বছরের চেয়ে ভুট্টার চাষ বেশি হয়েছে। কম খরচ আর বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন এই চাষ বাড়ছে। এছাড়া ভুট্টার দামও ভালো রয়েছে। এমন দাম পেলে ভুট্টা চাষে কৃষকরা আরো আগ্রহী হবে বলে তিনি জানান৷
তারা আরও বলেন,ভুট্টা ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হয়ে থাকে। এছাড়া কীটনাশক, সার ও সেচ তেমন লাগে না। নিড়ানিও কম দিতে হয়। চার থেকে সাড়ে চার মাসে এই ভুট্টা চাষ লাভজনক হওয়ায় এলাকার অনেকেই এখন অন্য আবাদ কমিয়ে ভুট্টা চাষে ঝুকেছেন। গত এক সপ্তাহ ধরে পুরোদমে ভুট্টা কাটা-মাড়াই নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে এবার শেরপুরে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫ হাজার ৩’শ ৫০ হেক্টর জমিতে কিন্তু চাষ হয়েছে ৫ হাজার ৪’শ ২৫ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি৷ আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার কাঙ্খিত ফলন হয়েছে।
একুশে সংবাদ//শে.প্র//এ.জে