সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের লিফট আজ তিনদিন ধরে নষ্ট হয়ে আছে। আরেকটি লিফট ভবন বর্ধিতকরণ কাজের জন্য অনেকদিন ধরে বন্ধ। এতে অসহনীয় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন রোগী ও তার স্বজনরা। অসুস্থ রোগী পায়ে হেঁটে উঠতে বা রোগী নিয়ে সিঁড়ি বয়ে উঠতে অসহনীয় কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। পাশাপাশি ওষুধসহ বিভিন্ন পথ্য আনতে বারবার নিচে যেতে আসতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে স্বজনদের।
জানা যায়, হাসপাতালের দুইটি লিফটের মধ্যে ছয়তলায় ভবন বর্ধিতকরণ কাজের জন্য একটি লিফট অনেকদিন হলো বন্ধ আছে। অন্যটি গতকাল (১৩ মে) সকালের দিকে হঠাৎ নষ্ট হয়ে গেলেও সেটি সন্ধ্যা পর্যন্ত জানতেনই না হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক। এরপর তিনি বিষয়টি জানতে পারলে ঠিক করার উদ্যোগ নেন।
অন্যদিকে হাসপাতালের দুটি লিফটই বন্ধ থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা। অসুস্থ রোগীকে নিয়ে সিঁড়ি বেয়েই চিকিৎসা নিতে ওপরে উঠতে হচ্ছে তাদের। সেই ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিতে হচ্ছে স্বজন বা অন্যদের। অনেক রোগী আবার ওপরে উঠে বা উঠতেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। যদিও পুরাতন ভবনের র্যাম সিঁড়ি দিয়ে তিনতলা পর্যন্ত স্ট্রেচার ঠেলে বা টেনে তোলা গেলেও ৪তলা বা ৫তলা পর্যন্ত উঠতে হচ্ছে সিঁড়ি মারিয়েই।
হাসপাতালের পঞ্চম তলায় মেডিসিন বিভাগের পেয়িং ওয়ার্ডে কথা হয় সদরের সায়দাবাদ ইউনিয়নের জারিলা গ্রামের ৬৮ বছর বয়সী সাধন চন্দ্র সূত্রধরের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার স্ত্রীকে কেমোর পাশাপাশি রক্ত দিতে হয়। তাকে রক্ত দেওয়ার জন্য পরশুদিন (১২ মে) হাসপাতালে ভর্তি করি। কাল সকাল পর্যন্ত লিফট চললেও বেলা ১১টার দিক থেকে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর গতকাল আমাকে রক্ত সংগ্রহ, ওষুধ কেনাসহ নানান কাজে আরও চারবার ৫তলা থেকে সিঁড়ি বেড়ে উঠানামা করতে হয়েছে। একবার তো আমি নিজেই খুব অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলাম। লিফট বন্ধ থাকায় সবারই অসহনীয় কষ্ট হচ্ছে।
হাসপাতালের লিফট অপারেটর সেলিম রেজা বলেন, ‘তিনদিন আগে রাত থেকেই লিফটের বাটন ঠিকমতো কাজ করছিল না। এটা একটা বড় সমস্যা, যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। পরে লিফট কাজ না করায় বন্ধ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রতন কুমার রায় বলেন, ৫ম তলার ওপরে ষষ্ঠ তলা বর্ধিতকরণ কাজের জন্য একটি লিফট বন্ধ আছে। আর আরেকটি লিফট নষ্ট হওয়ার বিষয়টি গতকাল সন্ধ্যায় জানার পরেই আমি গণপূর্ত বিভাগকে জানিয়েছি। তারা এটা সমাধানের জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিষয়টি জানার পরেই সেটি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যেই মালামাল নিয়ে ঢাকা থেকে লোকজন আসতেছেন।’ আজকের মধ্যেই সমাধান সম্ভব কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজকেই হবে কিনা এটা এখনই বলা যাচ্ছে না। যেহেতু সকল সরঞ্জাম ও টেকনিশিয়ান লোকালি পাওয়া যায় না। তাই সাপ্লাইয়ারের কাছ থেকে মাল ও টেকনিশিয়ান নিয়ে এসে কাজ করতে হবে। আমরা চেষ্টা করব দ্রুত সমাধান করার জন্য।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :