ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় কিস্তির টাকা নিয়ে এনজিওদের সঙ্গে হাতাহাতির জেরে পুলিশের সঙ্গে স্থানীয়দের ধস্তাধস্তির অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার সন্ধ্যার পরে ভাঙ্গা উপজেলার আলগি ইউনিয়নের শুয়াদী গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, শুয়াদী গ্রামের তারা মিয়া নামের এক ঋণগ্রহীতা পল্লী প্রগতি সহায়ক সমিতি নামক এনজিও নওপাড়া শাখা থেকে ২৫ হাজার টাকা ঋণ নেয়। এনজিও ম্যানেজার আক্তার হোসেন কিস্তির টাকা তুলতে শনিবার দুপুরে এলাকায় যায়। সেখানে ঋণ গ্রহীতা তারার সঙ্গে এনজিও কর্মীদের কিস্তির টাকা নিয়ে হাতাহাতি হয়। এ ঘটনায় এনজিও ম্যানেজার আক্তার হোসেন ভাংগা থানায় অভিযোগ দেন।
অভিযোগ পেয়ে ভাঙ্গা থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনিরুল সন্ধ্যার পরে তদন্তে যায়। পুলিশের অভিযোগ পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ঋণ গ্রহীতা তারা মিয়া দৌড়ে পালানোর সময় পড়ে গিয়ে আহত হয়। তখন এলাকাবাসী পুলিশের উপর হামলা চালায়।
ঋণ গ্রহীতা তারা মিয়ার ভাই চাঁন মিয়া জানান, আমার ছোট ভাই তারা মিয়া ২৫ হাজার টাকা ঋণ নেন। সেই টাকা নিয়ে এনজিওদের সঙ্গে হাতাহাতি হয় আজ দুপুরে। আমি খবর পেয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি নিয়ে এনজিও ম্যানেজার আক্তার হোসেনকে টাকা পরিশোধ ও মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য মাতুব্বরদের নিয়ে দায়িত্ব নেই। তারপরেও এনজিও কর্মীরা থানায় অভিযোগ দেন। দারোগা মনিরুল সন্ধ্যার পরে গিয়ে আমার ভাইকে কলার ধরে মারধর শুরু করেন। এ সময় আমার ভাইয়ের সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী পলি বেগম এগিয়ে গেলে পুলিশ তাকে গলা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এবং তার উপরে পুলিশ পড়ে যায়। এতে আমার ভাইয়ের স্ত্রী গুরুতর আহত হন। সাথে সাথে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ওদের বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ দায়ের করব সেই ভয়ে তারা উল্টো পুলিশ আমাদেরকে হয়রানি করার চেষ্টা করছে। এবং আমার ভাইয়ের স্ত্রীকে পুলিশ হাসপাতালের বেড থেকে ভয় দেখিয়ে নামিয়ে দিয়েছেন। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
এ ঘটনায় ভাঙ্গা থানার সেকেন্ড অফিসার মারুফ হোসেন জানান, আমরা এনজিও কর্মীদের সঙ্গে মারামারির ঘটনায় অভিযোগ পায়। সেই অভিযোগে পুলিশ তদন্তে যায়। ঋণগ্রহীতা তারা মিয়ার বিরুদ্ধে ভাঙ্গা থানায় ডাকাতি, মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তারা মিয়া আটকের ভয়ে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দৌড়ে পালাতে চেষ্টা করে। তখন পড়ে গিয়ে সে আহত হয়। এলাকাবাসী তারা মিয়াকে আটক করার গুজবে পুলিশের উপর স্থানীয়রা হামলা চালায়। এ সময় তিনজন পুলিশ আহত হন।
এ বিষয়ে তদন্তকারী অফিসার (এসআই) মনিরুল জানান, আসামি তারা মিয়ার স্ত্রী তিনি একজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলা, আমাকে তাদের বাড়িতে দেখে মহিলাটি তার স্বামীকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য দৌড়ে ঘরে প্রবেশ করে, আমি অন্য দরজা দিয়ে ঘরে প্রবেশ করলে ওরা বের হতে দৌড় দেয়। তখন তারা মিয়ার ধাক্কায় তার স্ত্রী পড়ে যায়। পরে আমি ওই মহিলাকে সহযোগিতা করেছি হাসপাতালে পাঠাতে।
এদিকে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক (আরএমও) মাইনুদ্দিন সেতু জানান, এমন একটি রোগী আসছিল বলে শুনেছি, আল্ট্রাসনোগ্রামের জন্য বলা হলে তিনি করার কথা বলে আর ফিরে আসেননি।
তারা মিয়ার বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
একুশে সংবাদ/সা.শ.প্র/জাহা



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

