ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের আঠারবাড়ির এলাকাবাসীর ধারণা প্রায় শতবর্ষের বেশি হবে রেইনট্রি গাছেটির বয়স। তার নিচে অনেক জায়গা জুড়ে ছায়া দিত গাছগুলো। দূরদূরান্ত থেকে লোকজন আসা-যাওয়ার পথে এই গাছগুলোর নিচে এসে বিশ্রাম নিত।
তাছাড়া নাম জানা অনেক পাখি এইসব গাছের ডালে বাসা বেঁধে বাস করত। ক্ষণিকের জন্য হলেও থমকে দাঁড়াত লোকজন। কিন্তু করাত ও কুড়ালের কোপে বৃহৎ বেশ কয়েকটি গাছ ও গাছের বড় বড় ডাল কেটে ফেলায় শুধু দাঁড়িয়ে আছে গাছের মূল অংশ। ধ্বংস হয়ে গেছে পাখির আবাসস্থল। এতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের আঠারবাড়ি এলাকায় আঠারবাড়ি-কেন্দুয়া মহাসড়কে।
মঙ্গলবার ঈশ্বরগঞ্জের রায়ের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের সড়কের পাশে অবস্থিত ইজিবাইক স্ট্যান্ড। সেই স্ট্যান্ডের পাশেই ডালপালা বিহীন একটি গাছটি দাঁড়িয়ে রয়েছে। গাছের পাশে অবস্থিত পান দোকানি মো.সুজন মিয়া জানান, গত শুক্র ও শনিবার একদল শ্রমিক এসে গাছের মোটামোটা ডাল করাত দিয়ে কেটে নিয়ে গেছে। ডালপালার কারণে এলাকাটি ছায়াযুক্ত ছিল। গাছের নিচে ছায়ায় সিএনজি ও ইজিবাইক নিয়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করত মানিক মিয়া, আজাহারুল ইসলাম ও আলী ফকির।
তাঁরা জানান, রোদ-বৃষ্টি ছাড়াও বিরূপ আবহাওয়া হলে এই গাছের নিছে আশ্রয় নিতাম। এখন তো সর্বনাশ করেছে। রায়ের বাজারের ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র জানায়,কর্তিত ডালপালাগুলো স্বপন মিয়ার করাত কলে রাখা হয়েছে। সেখানে গিয়ে ডালপালাগুলো পাওয়া যায়। করাত কলে অবস্থান করছিলেন শ্রমিক সর্দার ওয়াহেদ মিয়া।
তিনি জানান, কিশোরগঞ্জ সড়ক বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো.মাইন উদ্দিন তাকে ডাল পাল কাটার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি চারজন শ্রমিক দিয়ে ডাল কেটেছেন। কর্তিত ডালপালার কিছু অংশ বিক্রি করে দুই হাজার ৮০০ টাকা শ্রমিকের মজুরি পরিশোধ করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মাইন উদ্দিন প্রথমে এ ধরনের নির্দেশ দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন। খবর পেয়ে সেখানে যান বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. লুৎফুর রহমান।
তিনি বলেন,আঠারবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মো. জুবের আলম রূপক তাঁকে এ খবর দেন। তিনি এসে গাছের ডালপালা কেটে ফেলার সত্যতা পেয়েছেন। করাত কলে যে ডালপালগুলো রাখা হয়েছে সেগুলো জব্দ করা হয়েছে। পরে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইউপি চেয়ারম্যান জুবের আলম রূপক বলেন,কোনো কারণ ছাড়া সড়কের পাশে থাকা জীবন্ত গাছের ডালপালা কেটে নেওয়া যুক্তিসঙ্গত হতে পারে না। আঠারবাড়ি ইউনিয়নের শতবর্ষী নানাজাতের প্রচুর গাছ রয়েছে। এসব গাছে পাখির আবাসস্থল রয়েছে। ডালপালা কেটে পাখির আবাসস্থল নষ্ট করা হচ্ছে তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন বলে জানান।
একুশে সংবাদ/বিএইচ



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

