নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস জন্মস্থান বিলশা কবরস্থানে বাবা-মার পাশে চীর নিদ্রায় শায়িত হলেন।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) বেলা ২ টায় জন্মস্থান গুরুদাসপুরের বিলশা ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে তাকে সমাহিত করা হয়।
এর আগে বুধবার (২৯ আগষ্ট) সকাল ৭টা ২২ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
সংসদ সদস্যদের ব্যাক্তিগত সহকারী ইব্রাহীম হোসেন জানান, আব্দুল কুদ্দুসের প্রথম জানাজা গতকাল বুধবার যোহর নামাজ শেষে সংসদ ভবন চত্তরের মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। এর পর সন্ধ্যায় তার মরদেহ নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড়ে বাসভবনে নিয়ে আসা হয়। সেখানে লাশ পৌছার পর স্বজন ও সহকর্মীরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় দ্বিতীয় জানাজার জন্য লাশ নেয়া হয় আব্দুল কুদ্দুসের নির্বাচনী এলাকা বড়াইগ্রাম পাইলট স্কুল মাঠে। সেখানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। জানাজা নামাজে ডেপুটি স্পিকার এ্যাডভোকেট সামসুল হক টুকু,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খাইরুজ্জামান লিটন, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল,তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহম্মেদ পলক উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও সদর আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল,লালপুর বাগাতিপাড়ার সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল,সংরক্ষিত এমপি রত্না রহমান, জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান,জেলা প্রশাসক আবু নাসের ভূঁঞা,পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলামসহ সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতিতে জানাজার মাঠ জনসমুদ্রে পরিনত হয়।
বেলা ১২ টায় তৃতীয় জানাজার জন্য লাশ নেয়া হয় গুরুদাসপুর সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। জানাজা শেষে উপস্থিত নেতা- কর্মীসহ সর্বসাধারণ অশ্রুসিক্ত নয়নে প্রিয় নেতাকে শেষ বিদায় জানান। সর্বশেষ বেলা ২ টায় বিলশা ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে ওই কবরস্থানে বাবা- মার কবরের পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
উপজেলা আ.লীগের তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক মাজেম আলী জানান, শ্বাসকষ্ট জনিত কারনে সাংসদ আব্দুল কুদ্দুসকে গত শনিবার (২৬ আগষ্ট) সন্ধ্যায় অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় নেওয়া হয়। পরে অক্সিজেনের মাত্রা কমতে থাকায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিউতে) নেওয়া হয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ১কন্যা ও ১ পুত্র সন্তানসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, চলতি বছর পরিবারসহ দ্বিতীয়বারের মতো পবিত্র হজ্বব্রত পালন করে সম্প্রতি দেশে ফেরেন তিনি। আগষ্ট মাসজুড়ে প্রতিদিনই একাধিক কর্মসুচীতে অংশ নিয়ে শারিরীকভাবে ক্লান্ত ছিলেন তিনি। তাছাড়া তিনি দীর্ঘদিন ধরেই শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে ভুগছিলেন। তিনি নিয়মিত থাইল্যান্ডে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
উল্লেখ্য-৭৭ বছর বয়সী আব্দুল কুদ্দুস বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে ৭ বার মনোনয়ন পেয়ে ৫ বার সংসদ সদস্য (পঞ্চম,সপ্তম,নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ) নির্বাচিত হন। সপ্তম সংসদে তিনি মৎস্য ও পশু সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দ্বায়িত্ব পালন করেন। তিনি রাজশাহী কলেজের নির্বাচিত ভিপি ছিলেন এবং বৃহত্তর রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতিও ছিলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকত্তোর ডিগ্রি অর্জনকারী আব্দুল কুদ্দুস মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ভারতে ট্রেনিং নিয়ে মুজিব বাহিনীর আঞ্চলিক কমান্ডার ও সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন।
একুশে সংবাদ/জ.ই.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :