কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ৮টি দানসিন্দুক খুলে এবার ১৯ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। এখন চলছে গণনার কাজ। দানসিন্দুকে বাংলাদেশি টাকা ছাড়াও ডলার, পাউন্ড, রিয়াল, রিঙ্গিত ও দিনারসহ বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারও পাওয়া গেছে।
শনিবার (৬ মে) সকাল ৯টার দিকে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এটিএম ফরহাদ চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে দানসিন্দুকগুলো খোলা হয়।
সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণের উপস্থিতিতে মসজিদের ৮টি দানসিন্দুক খোলা হয়। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এটিএম ফরহাদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, টাকা গণনার কাজ চলছে। দানসিন্দুক খুলে প্রথমে ১৯টি বড় বস্তায় টাকা ভরা হয়। এরপর শুরু হয় টাকা গণনা। এ কাজে মাদ্রাসার ১১২ ছাত্র, ব্যাংকের ৫০ স্টাফ, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ জন সদস্য রয়েছেন।
কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও পাগলা মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ মিয়া জানান, মসজিদের প্রাপ্ত দানের টাকা থেকে পাগলা মসজিদ এবং এই মসজিদ কমপ্লেক্সের অন্তর্ভুক্ত মাদ্রাসা, এতিমখানা ও গোরস্তানের ব্যয় নির্বাহ করাসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানায় সহায়তার পাশাপাশি গরীব ছাত্র ও দুঃস্থদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক কাজেও টাকা প্রদান করা হয়।
পারভেজ মিয়া আরও জানান, সব টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হবে। বর্তমানে পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্সকে ঘিরে এখানে একটি বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। এটি বাস্তবায়ন হলে মসজিদ কমপ্লেক্স আরও দৃষ্টিনন্দন হবে।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, সুউচ্চ মিনার ও তিন গম্বুজ বিশিষ্ট তিনতলা বিশাল পাগলা মসজিদ কিশোরগঞ্জের অন্যতম ঐতিহাসিক ধর্মীয় স্থাপনা। জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে হারুয়া এলাকায় অবস্থিত পাগলা মসজিদটি প্রায় চার একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত।
কথিত আছে, প্রায় পাঁচশত বছর পূর্বে বাংলার বারো ভুঁইয়া বা প্রতাপশালী বারোজন জমিদারদের অন্যতম ঈশা খাঁর আমলে দেওয়ান জিলকদর খান ওরফে জিল কদর পাগলা নামক একজন ব্যক্তি নদীর তীরে বসে নামাজ পড়তেন। পরবর্তীতে ওই স্থানটিতে মসজিদটি নির্মিত হয়। জিল কদর পাগলার নামানুসারেই মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’হিসেবে পরিচিতি পায়।
এর আগে সর্বশেষ এ বছরের ৭ জানুয়ারি ৩ মাস ৬ দিন পর দান দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছিল। তখন ৮টি দানসিন্দুক খুলে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ ৪ কোটি ১৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।
একুশে সংবাদ/আ.ট.প্র/জাহাঙ্গীর