জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে এক কিশোরীকে জোরপূর্বক বাসায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির নাম সালাউদ্দিন আহমেদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের কাউন্সিল শাখায় সহকারী ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং ২০১৬ সালে অবসর গ্রহণ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ৯ নভেম্বর রাত আনুমানিক ৮টার দিকে আল-বেরুনী হলের সামনে নাসিমা আক্তার (১৫) নামের এক কিশোরীকে ইসলামনগরে নিজের বাসায় নিয়ে যেতে চেষ্টা করছিলেন সালাউদ্দিন। এসময় হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী বিষয়টি দেখে কিশোরীকে উদ্ধার করেন। পরে শিক্ষার্থীরা দুজনকে জাকসু ভবনে নিয়ে যান। সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখা মুচলেকা নিয়ে দুজনকেই ছেড়ে দেয়।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সালাউদ্দিনের প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তিনি দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। তবে চারিত্রিক ও আচরণগত সমস্যার কারণে সেই সংসার দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। দ্বিতীয় স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যান। এলাকাবাসীর অভিযোগ, তিনি বিভিন্ন সময় কিশোরী ও নারীদের বাসায় নিয়ে আসতেন এবং রাত্রীযাপন করতেন। ইসলামনগরের বাসিন্দারাও এসব কর্মকাণ্ড সম্পর্কে অবগত থাকার কথা জানান।
তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার নাম করে, জমি ক্রয়–বিক্রয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমি কোনো কিশোরীকে বাসায় আনার চেষ্টা করিনি। উনি আমার স্ত্রী। একটু মনমালিন্য হওয়ার কারণে বাসা থেকে চলে যেতে চাইছিলেন। জাহাঙ্গীরনগরে পিঠা খেতে যেতে চাইলে আমি পাশের বাসার একজন ভাড়াটিয়াকে তার সঙ্গে পাঠাই। সেখানে গিয়ে তিনি আবার চলে যেতে চাইলে ওই ভাড়াটিয়া আমাকে ফোন করেন। আমি গেলে তিনি আমাকে দেখে দৌড়াতে চান। তখন তাকে থামানোর চেষ্টা করি। শিক্ষার্থীরা আমাদের জাকসু ভবনে নিয়ে যায়, পরে নিরাপত্তা অফিসে নেয়। আমাদের নাম-ঠিকানা লিখে তারা ছেড়ে দেয়। এরপর আমি স্ত্রীকে নিয়ে বাসায় ফিরে আসি।”
প্রতারণার অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, “এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এমন কোনো কর্মকাণ্ডে আমি জড়িত নই।”
অভিযুক্তের সন্তানরা জানান, এসব অভিযোগ ও আচরণজনিত কারণে তারা সামাজিকভাবে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন। তাদের দাবি— “বাবার এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই, এবং এসবের দায় আমাদের নয়।”
একুশে সংবাদ//এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

