AB Bank
ঢাকা শনিবার, ০৯ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ফেল করলেও পোষ্যদের ভর্তির দাবি


ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়  ফেল করলেও পোষ্যদের ভর্তির দাবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে পোষ্য কোটার ক্ষেত্রে ন্যূনতম পাশ নম্বর পেলেই ভর্তির সুযোগ মিলছে। তবে এমন শর্ত শিথিলের পরেও পোষ্যদের অনেকে পাশ নম্বরের কম নম্বর পাওয়ায় তাদের ভর্তি করানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই গতবারের ন্যায় এবারও ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করলেও শর্তহীনভাবে পোষ্যদের ভর্তির দাবি জানিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। 

এদিকে আজ বুধবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ১১টায় উপাচার্যের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবির প্রেক্ষিতে সভায় পোষ্য কোটায় ভর্তির নম্বর শিথিলকরণের বিষয়ে আলোচনা করা হবে জানা গেছে। তবে সভায় যাতে এমন ধরনের কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা না হয় তার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা পোষ্য কোটার বিষয়ে এমন দাবিকে অযৌক্তিক বলে মনে করছেন। পোষ্য কোটায় পাশ নম্বরে ভর্তির বিষয়টিকেও মেধার অবহেলা ও বৈষম্যমূলক আচরণ হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন তারা।

জানা যায়, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ার শর্ত অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষায় সর্বনিম্ন ৩০ নম্বর পেলেই একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের যোগ্যতা অর্জন করবেন। কোটাধারীদের জন্যও একই শর্ত প্রযোজ্য।

এদিকে ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় সৃষ্টির পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানরা পোষ্য কোটার সুবিধা নিয়ে আসছিল। তবে ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে পোষ্য কোটায় ভর্তির কোনো বিশেষ সুযোগই রাখা হয়নি। তবে শুধু মাত্র ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেই শর্তহীনভাবে পোষ্যদের ভর্তির দাবি জানিয়েছিলেন তারা। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা সাবেক উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি ও দীর্ঘদিন যাবত কর্মবিরতি পালন করেছেন। এর বিপরীতে এ পদ্ধতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরাও বিভিন্ন সময় আন্দোলন করেছেন। এমনকি শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকেও পোষ্য কোটার বিষয়টি বিবেচনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে আবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির ক্ষেত্রে পাশ মার্ক ৩০ ও ২৪ নম্বর রাখা হয়েছে। গত ০৯ অক্টোবর ন্যূনতম পাশ নম্বর পেয়েছে এমন পোষ্যদের সাক্ষাৎকার নিয়েছে পোষ্য কোটা সংশ্লিষ্ট ভর্তি কমিটি। তবে এক্ষেত্রেও পোষ্যদের অনেকেই পাশ নম্বরের চেয়ে কম নম্বর পাওয়ায় ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে না। ফলে এমন পরিস্থিতিতে সেই পুরনো দাবি সামনে আনছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ফেল করলেও পোষ্যদের শর্তহীন ভাবে ভর্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। এবার তারা এখনও মাঠের কর্মসূচিতে না গেলেও বিভিন্নভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কনভিন্স করার চেষ্টা করছেন। তারা তাদের দাবির পক্ষে বিভিন্ন যুক্তিও পেশ করছেন।

আজ বুধবার বেলা ১১টায় প্রশাসন ভবনের সভা কক্ষে উপাচার্যের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির ৩য় সভায় অনুষ্ঠিত হবে। আলোচ্যসূচি অনুযায়ী সভায় পোষ্য কোটায় ভর্তির নম্বর শিথিলকরণের বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের করা হবে বলে জানা গেছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই কর্মকর্তার ছেলে ভর্তি পরীক্ষায় পাশ করেছেন, তবে বিভাগীয় শর্ত পূরণ না করায় তারা পোষ্য কোটায় ভর্তি হতে পারেনি। এ বিষয়েও আলোচনা প্রয়োজন মর্মে আলোচ্যসূচিতে যুক্ত করা হয়েছে। 

এদিকে পোষ্য কোটা নিয়ে কর্মকর্তা কর্মচারীদের এমন দাবিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। ভর্তি কমিটির সভায় এমন ধরনের কোন সিদ্ধান্ত না নেওয়ার দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, কোটা চালু হয়েছিল সমাজের বিভিন্ন অনগ্রসর ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য। অথচ এই কোটাকে এমন জায়গায় ব্যবহার করা হচ্ছে যাতে গরিব, মেধাবী, সৎ ও যোগ্য শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও যোগ্যতাকে মূল্যহীন প্রমাণ করা হচ্ছে। এমনকি যে পরিবারে একজন চাকরি করে, সেই পরিবার এমনিতেই স্বাবলম্বী। তাহলে কিভাবে তাকে অনগ্রসর বলব? সে শুধু কিভাবে পোষ্য কোটার ভিত্তিতে ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা রাখে? পোষ্য কোটা ২৪ এর জুলাই বিপ্লবের আন্দোলনের ফলাফলের পরিপন্থি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে পোষ্য কোটার অবসান চাই।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, পোষ্য কোটায় শিক্ষার্থীদের পাশ নম্বর শিথিল করা তো নয়ই, তাদেরকে যে শুধুমাত্র পাশ নম্বরে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে সেটাও থাকা উচিৎ না। এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে সেটা হবে চরম বৈষম্যমূলক। আর আমাদের জুলাই-আগস্টের আন্দোলন ছিল সকল প্রকার বৈষম্যের বিরুদ্ধে। পোষ্য কোটার ফলে শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। অনেক আগ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন বৈষম্যমূলক নিয়ম চলে আসছে, যা কোনোভাবে কাম্য নয়। আমরা অনতিবিলম্বে এমন নীতির অবসান চাচ্ছি। পাশাপাশি সকল শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা ব্যবস্থার করার দাবি জানাচ্ছি।  

এদিকে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি টিপু সুলতান বলেন, শুনেছি আজকে ভর্তি কমিটির সভা আছে। কমিটিতে তো আমরা নেই। প্রশাসন আলোচনা করে তারা সিদ্ধান্ত নিবে। যেহেতেু কর্মকর্তারা আগে থেকেই এই সুবিধাটা পেয়ে আসছিলেন সেই হিসেবে যদি সুযোগ রাখা হয় তাহলে ভালো। আর না হলে তো আমাদের কিছু বলার নেই। 

বিষয়টি নিয়ে ভর্তি কমিটির সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, অনেকেই আমাকে এটা নিয়ে কনভিন্স করার চেষ্টা করেছে। এক্ষেত্রে তারা যে যুক্তিগুলো দেখিয়েছে সেগুলো শতভাগ গ্রহণযোগ্য নয়। তবে আমরা চাই কোথায় যেন বৈষম্য না হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অর্জিত এই বাংলাদেশে থেকে আমরা বৈষম্য দূর করতে চাই। শতভাগ না হলেও সেটা যেন ৯৯ শতাংশে নিশ্চিত করা যায়। এক্ষেত্রে যা যা করণীয় তা করতে হবে। আজ ভর্তি কমিটির সভা আছে। উপাচার্যসহ ভর্তি কমিটির অন্যরা সেখানে থাকবেন। সবার আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত আসবে। আমার মনে হয়না পোষ্য কোটার বিষয়ে আলোচনাটা ফলপ্রসূ হবে।

একুশে সংবাদ/ এস কে

Link copied!