AB Bank
ঢাকা বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

২০২২ সাল থেকে অবন্তিকা ও আম্মানের মনোমালিন্য শুরু


২০২২ সাল থেকে অবন্তিকা ও আম্মানের মনোমালিন্য শুরু

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রায়হান সিদ্দিকী আম্মান (আম্মান সিদ্দীকী) ও ফাইরুজ অবন্তিকা।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকা ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। আত্মহত্যার আগে সে তার ফেজবুক আইডি-তে একটি পোস্ট দেয়। আর তার আত্মহত্যার জন্য ২জনকে দায়ী করেন তিনি। একজন তার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী আর অন্যজন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। জানা যায় অভিযুক্ত আম্মান সিদ্দিকীর সাথে অবন্তিকার মনোমালিন্য শুরু দুই বছর আগে ২০২২ সালে। তখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানলেও কোনো সমাধান দেয়নি। বরং প্রক্টর অফিসে এ নিয়ে মানসিক নির্যাতন করা হয় অবন্তিকা ও তার বাবা-মাকে।

এমন অভিযোগ তুলে জগন্নাথের শিক্ষার্থীরা বলছেন, দুই বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী অংকন বিশ্বাসের রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল। সেই প্রতিবেদন দেয়া হয়নি এখনও। এবার ঘটলো অবন্তিকার আত্মহননের ঘটনা।

শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রশাসনের গাফিলতির কারণেই ঘটছে এসব। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনায় ছাড় দেয়া হবে না কাউকে।

২০২২ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা-অপবাদমূলক কিছু তথ্য ছড়ানো নিয়ে মনোমালিন্য হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকা ও তার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীর মধ্যে। তবে এরপর দুই বছর কাটলেও এই সমস্যার কোনো সুরাহা দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বরং অভিযোগ রয়েছে এ নিয়ে প্রক্টর অফিসে সমঝোতায় বসলে অকথ্য ভাষায় কথা শোনানো হয় অবন্তিকা ও তার বাবা-মাকে। এরপর আরেক দফায় ২০২৩ সালেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় প্রক্টর অফিসে, এমনটাই দাবি সহপাঠীদের।

এদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আইসিটি আইনে গ্রেফতার খাদিজার মুক্তির দাবিতেও সরব ছিলেন অবন্তিকা। সে সময় তার কোনো এক সহপাঠী তাকে হুমকি দেন। এমন কিছু স্ক্রিনশট এখন ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যেখানে দেখা যায়, তাকে উত্ত্যক্তকারীর বিরুদ্ধে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ দিয়ে আটবার সেখানে গেলেও কোনো সমাধান পাননি অবন্তিকা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, জবি কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ায় না। বিশ্ববিদ্যালয় কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য- এমনটাও প্রশ্ন তাদের।

২০২২ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অংকন বিশ্বাস নামের আরেক শিক্ষার্থী রহস্যজনক মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে জানা যায়, শাকিল আহমেদ নামের একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তার। সে সময়ও তার মৃত্যু নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে সেই প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি এখন পর্যন্ত। রহস্যসের মধ্যেই রয়ে গেছে অংকনের মৃত্যুর কারণ।

অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনায় সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অবন্তিকার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, অবন্তিকার মৃত্যুর বিষয়ে শেষ দেখে ছাড়বেন তারা।

জবি রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) আইনুল ইসলাম বলেন, তদন্তের পরিধি অনেক বড়। তাই তদন্ত করতে সময় লাগবে। তবে তদন্তের আশ্বাস যখন দেয়া হয়েছে, তখন এর শেষ দেখে ছাড়ব।

তবে এর আগের অংকনের মৃত্যুররহস্য কেন অন্ধকারে সে প্রশ্নের দায়সারা উত্তর কর্তৃপক্ষের। আইনুল ইসলাম বলেন, ২০২২ সালের একজন শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার বিষয়টিও তদন্তাধীন আছে।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাতে জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রায়হান সিদ্দিকী আম্মানকে (আম্মান সিদ্দিকী) দায়ী করে ফেসবুকে পোস্ট দেন ফাইরুজ অবন্তিকা। এরপর ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়। পরে উপাচার্য এসে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে কোতোয়ালি থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. মনির হোসেন জানান, এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এদিকে অবন্তিকার আত্মহত্যাকে হত্যা দাবি করে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন তার মা ও স্বজনরা। একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে শোকে স্তব্ধ পুরো পরিবার।

 

একুশে সংবাদ/স.ট.প্র/জাহা

 

Link copied!