গলের টেস্টে দিনের সূচনা হয়েছিল বাংলাদেশের বিপর্যয়ে, তবে দিনের শেষের চিত্রটা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সফরের প্রথম দিনে ব্যাট হাতে বড় দুটি শতকে ভর করে দৃঢ়ভাবে ম্যাচে ফিরেছে বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিমের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দিন শেষে সফরকারীদের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২৯২ রান।
টেস্ট অধিনায়ক শান্ত তুলে নিয়েছেন তার ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি, দীর্ঘ দেড় বছরের ব্যবধানে। অপরদিকে, মুশফিক নিজের ১২তম টেস্ট শতক তুলে নেন প্রায় ৯ মাস পর। তারা দুজন মিলে গড়েছেন ২৪৭ রানের জুটি, যা বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে চতুর্থ উইকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এবং সব মিলিয়ে ষষ্ঠ সর্বোচ্চ জুটি হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।

শুরুটা ভালো না হলেও শেষটা দারুণ
বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুটা ছিল হতাশাজনক। দলীয় স্কোরবোর্ডে মাত্র ৪৫ রান থাকতেই ফিরে যান শীর্ষ তিন ব্যাটার। এনামুল হক বিজয় মাত্র ১০ বল খেলে শূন্য রানে আউট হন আসিথা ফার্নান্দোর বলে, স্লিপে ক্যাচ দেন কুশল মেন্ডিসের হাতে। এরপর অভিষিক্ত স্পিনার থারিন্দু রত্ননায়েকে ফিরিয়ে দেন মুমিনুল হক (২৯) ও সাদমান ইসলামকে (১৪)।
সেখান থেকে ইনিংস গুছিয়ে নেন শান্ত ও মুশফিক। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারের এই জুটি শ্রীলঙ্কানদের আর কোনো সাফল্য পেতে দেয়নি। তারা প্রায় ৭৪ ওভারে গড়েছেন ২৪৭ রানের কার্যকরী পার্টনারশিপ। শান্ত ছিলেন আগ্রাসী, শট খেলেছেন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। অন্যদিকে মুশফিক বেছে-বেছে খেলেছেন, চার মারার চেয়ে এক-দুই নিয়ে রান তোলাকেই গুরুত্ব দিয়েছেন। তার শতক এসেছে ১৭৬ বল খেলে, যেখানে ছিল মাত্র ৫টি বাউন্ডারি।

সমালোচনার জবাবে শান্ত ও মুশফিকের প্রত্যাবর্তন
চাপের মধ্যে ছিলেন দুজনই। মুশফিককে নিয়ে চলছিল অবসর-আলোচনা, বিশেষ করে ওয়ানডে থেকে সরে দাঁড়ানোর পর। সবশেষ ১৩ ইনিংসে তিনি ফিফটিও পাননি। তবে আজকের শতক যেন সেই আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার এক প্রতীক।
অন্যদিকে, শান্ত ২০২৪ সালে টেস্টে ছিলেন অফফর্মে, গড় ছিল ২১.১৩। তবে ২০২৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। আজকের ইনিংসে তার পুরোনো ব্যাটিং রূপ ফিরে এসেছে, সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে।
বল হাতে শ্রীলঙ্কার হয়ে থারিন্দু রত্ননায়েকে ২টি এবং আসিথা ফার্নান্দো ১টি উইকেট নিয়েছেন।
একুশে সংবাদ/এ.জে