ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা দশম টেস্ট সিরিজ জয়ের নজির গড়লো দক্ষিণ আফ্রিকা। গতরাতে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের তৃতীয় দিন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪০ রানে হারিয়েছে প্রোটিয়ারা। সিরিজের প্রথম টেস্ট ড্র হয়েছিলো। ফলে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জিতলো দক্ষিণ আফ্রিকা। ১৯৯২ সালে প্রথম হওয়া দ্বিপাক্ষীক সিরিজে জিতেছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে সবগুলো সিরিজেই জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
গায়নায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ৫ উইকেট হাতে নিয়ে ২৩৯ রানে এগিয়ে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম ইনিংস থেকে পাওয়া ১৬ রানের লিডকে সাথে নিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে দিন শেষে ৫ উইকেটে ২২৩ রান করেছিলো প্রোটিয়ারা। কাইলে ভেরেনি ৫০ ও ওয়াইন মুল্ডার ৩৪ রানে অপরাজিত ছিলেন।
তৃতীয় দিনের প্রথম ওভারেই মুল্ডারকে ৩৪ রানেই বিদায় দেন স্পিনার জোমেল ওয়ারিকান। এরপর লোয়ার অর্ডারে ৩ উইকেট শিকার করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২৪৬ রানে আটকে রাখতে বড় ভূমিকা রাখেন পেসার জেইডেন সিলেস। সেট ব্যাটার ভেরেনিকে ৫৯ ও কেশব মহারাজ-নান্দ্রে বার্গারকে খালি হাতে ফেরান তিনি। ইনিংসে ৬১ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন সিলেস। ১৫ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিলেন এই ডান হাতি পেসার।
২৬৩ রান তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার ও স্পিনারদের তোপের মুখে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের টপ অর্ডার। তাদের ব্যর্থতায় ১০৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে ক্যারিবীয়রা। অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রার্থওয়েট ২৫, মিখাইল লুইস ৪, কেসি কার্টি ১৭, অ্যালিক আথানাজে ১৫, কেশব হজ ২৯ ও জেসন হোল্ডার খালি হাতে ফিরেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের টপ অর্ডারকে ধসিয়ে দিতে ৪ উইকেট ভাগাভাগি করে নেন দক্ষিণ আফ্রিকার দুই পেসার মুল্ডার ও রাবাদা। বাকী ২ উইকেট শিকার করেন অফ স্পিনার ডেন পিৎ।
চাপে পড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজকে লড়াইয়ে ফেরান উইকেটরক্ষক জশুয়া ডা সিলভা ও গুদাকেশ মোটি। সপ্তম উইকেটে ১০৫ বলে ৭৭ রানের জুটি গড়েন তারা। দলীয় ১৮১ রানে মোতিকে শিকার করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে দুর্দান্ত ব্রেক-থ্রু এনে দেন মহারাজ। ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৫ রান করেন মোতি। এক ওভার পর আবারও উইকেট শিকার করেন মহারাজ। আরেক সেট ব্যাটার সিলভাকে ২৭ রানে থামান তিনি।
মহারাজার ঘূর্ণিতে ১ রানে দুই ব্যাটারের পতনে হারের মুখে ছিটকে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৮২ রানে অষ্টম উইকেট পতন হয় তাদের। এ অবস্থায় নবম উইকেটে ২৩ রান যোগ করেন জোমেল ওয়ারিকান ও শামার জোসেফ। দলীয় ২০৫ রানে জোসেফকে ব্যক্তিগত ১১ রানে থামান রাবাদা।
শেষ উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান ওয়ারিকান ও সিলেস। রানের চাকা সচল রেখে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তারা। কিন্তু সিলেসকে ৪ রানে থামিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার জয় নিশ্চিত করেন মহারাজ। ২২২ রানে গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন ওয়ারিকান। দক্ষিণ আফ্রিকার মহারাজ ও রাবাদা ৩টি করে উইকেট নেন। এই ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিনার হিসেবে টেস্ট সর্বোচ্চ উইকেট শিকার হন মহারাজ। ৫২ টেস্টে ১৭১ উইকেটের মালিক এখন মহারাজ। ম্যাচ সেরা মুল্ডার ও সিরিজ সেরা হন মহারাজ।বিশ^ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ৬ ম্যাচে ২ জয়, ৩ হার ও ১ ড্র’তে ৩৮.৮৯ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চমস্থানে উঠলে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৯ ম্যাচে ১ জয়, ৬ হার ও ২ ড্র’তে ১৮.৫২ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতেই থাকলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
আগামী ২৪ আগস্ট থেকে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-দক্ষিণ আফ্রিকা।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :