দু`বছর আগে অ্যাডিলেডে সেমিফাইনালে হারের পরে ডাগ-আউটে বসে কেঁদে ফেলেছিলেন। আর আজ গায়ানায় সেই একই মঞ্চে সেই একই দলকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরে ড্রেসিংরুমে গিয়ে আবেগে ভেসে গেলেন ভারতীয় দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মা।
তার চোখে পানি এসেছিল কিনা, সেটা নিশ্চিতভাবে জানা নেই। কিন্তু সেমিফাইনালে জিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছানোর পরে যেভাবে আবেগে ভেসে গেলেন রোহিত, তা দেখে সকলেই বলছেন যে একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ হল। সেদিন কষ্টের চোখের পানি আজ আনন্দাশ্রুতে পরিণত হয়েছে। আর সেই আবেগের মুহূর্তে রোহিতকে সান্ত্বনা দেন বিরাট কোহলি। তার মুখের অভিব্যক্তি মনে হচ্ছিল যে রোহিতকে মজার কিছু বলে হাসানোর চেষ্টা করছেন। যে দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। আবেগে ভেসে গিয়েছেন নেটিজেনরাও। ‘রোহিরাট’-র ব্রোম্যান্সে মেতেছেন তারা।
এক নেটিজেন বলেন, `অ্যাডিলেডে চোখে পানি থেকে গায়ানায় গর্বিত ক্যাপ্টেন। এটাই ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মার প্রত্যাবর্তনের দিন।` অপর একজন বলেন, `ফাইনালে ওঠার পরে আবেগপ্রবণ রোহিত শর্মা।` ভারতের এক ক্রিকেট ফ্যান বলেন, ‘আমারও চোখে পানি চলে এসেছে। ২০২২ সালের শাপমুক্তি ঘটল। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়া হল।’
এক নেটিজেন আবার ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং ২০২৩ সালের একদিনের বিশ্বকাপে হারের পরে রোহিত এবং বিরাটের কোলাজের ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘প্রতিটি মুহূর্তে ওরা একসঙ্গে থেকে এসেছেন। যখন ওরা ফাইনাল এবং সেমিফাইনালে হেরে গিয়েছিলেন, তখন ওরা একসঙ্গে ছিলেন। যখন বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মা সেমিফাইনালে জিতলেন, তখনও তারা একসঙ্গে আছেন।’
আর সত্যিই তো শাপমুক্তি। ২০২২ সালে অ্যাডিলেডে টিম ইন্ডিয়াকে ধ্বংস করে দিয়েছিল ইংল্যান্ড। সেটাও দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ছিল। ভারত প্রথমে ব্যাট করেছিল। নির্ধারিত ২০ ওভারে ছয় উইকেটে ১৬৮ রান তুলেছিল। জবাবে ১৬ ওভারে বিনা উইকেটে ১৭০ রান তুলে ফেলেছিল ইংল্যান্ড। পৌঁছে গিয়েছিল ফাইনালে।
সেই ক্ষতটা গায়ানায় দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের সময়ও ভুলতে পারেননি ভারতীয় ফ্যানরা। কারণ অ্যাডিলেডে যত রান তুলেছিল ভারত, তার কাছাকাছিই গায়ানায় রান করে। আবার জস বাটলার শুরুটাও ভালো করেন। সেইসব মিল নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট ভক্তদের মনটা `কু` ডাকলেও মূল ব্যাপারটাই তো আলাদা ছিল। অ্যাডিলেড এবং গায়ানার কন্ডিশন পুরোপুরি আলাদা। আর অ্যাডিলেডে জসপ্রীত বুমরাহ-কুলদীপ যাদব ছিলেন না। গায়ানায় খেলেছেন।
আরও একটা জিনিস আলাদা ছিল। অ্যাডিলেডে সেই হারের পরই নিজের খেলার স্টাইল পুরোপুরি পালটে ফেলেন রোহিত। অ্যাডিলেডে যে কাজটা করতে পারেননি, তা ২০২৩ সালের একদিনের বিশ্বকাপে করেছিলেন। যা ভারতের ফাইনালে ওঠার অন্যতম কারণ ছিল। ফাইনালেও সেই কাজটা করেছিলেন রোহিত। তাই তো আজও সবাই বলেন যে ইশ! ট্র্যাভিস হেড যদি ক্যাচটা মিস করতেন। আর ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ঠিক সেটাই করছেন রোহিত --- নিঃস্বার্থ ক্যাপ্টেন রোহিত!!
একুশে সংবাদ/ এস কে