চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে কয়েক দিনের ঠান্ডা ও শীতের তীব্রতা এবং হিমেল হাওয়া বেড়ে যাওয়ায় শহরের প্রধান প্রধান সড়কের পাশে গড়ে ওঠা ফুটপাতের পুরোনো কাপড়ের দোকানগুলোতে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। দোকানগুলোতে সব বয়সের নারী-পুরুষ ও শিশুরা শীতের কাপড় কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন। চাহিদা মতো কিনছেন শীতের পোশাক।
জীবননগর উপজেলার ডাকবাংলো মার্কেট, কৃষি মার্কেট, উপজেলা মার্কেট, ইসলামী ব্যাংক মার্কেট, বাসস্ট্যান্ড মার্কেটসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বিভিন্ন গ্রামাঞ্চল থেকে আসা নারী-পুরুষ ও শিশুরা ফুটপাতে বসা সস্তা কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় করছেন।
দোকানিরা জানান, এ শীতে তারা প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাপড় বিক্রি করছেন। ফুটপাতে কম দামে ছোট শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষের জন্য নানা ধরনের গরম কাপড় নিয়ে বসেছেন তারা।
জীবননগর পৌর শহরের ডাকবাংলো থেকে বাসস্ট্যান্ড হয়ে উপজেলা পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে বসেছে নতুন ও পুরোনো কাপড়ের হাট। শীতের তীব্রতা থেকে রেহাই পেতে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ সবাই শীতের কাপড় কিনছেন। এসব ক্রেতার বেশির ভাগই নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ। তারা দেখে-শুনে কম দামের নতুন ও পুরোনো পোশাক কিনছেন।
ফুটপাতের দোকান থেকে কাপড় কিনতে আসা হাবিবুর রহমান বলেন, “ঠান্ডা নিবারণের জন্য গরম কাপড় দরকার। মার্কেটে নতুন কাপড়ের দাম গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। ফুটপাতে নতুন ও পুরোনো কাপড়ের দাম তুলনামূলক কম, মানও ভালো। তাই এখানে এসেছি। আমি একটি চাদর ও সুয়েটার কিনেছি।”
কাপড় কিনতে আসা ফরিদা আক্তার বলেন, “জীবননগরে তুলনামূলক ঠান্ডা বেশি থাকে। তাই প্রতি বছরই সুয়েটারসহ গরম কাপড় কিনতে হয়। মার্কেটে নতুন কাপড়ের দাম অনেক বেশি, তাই ফুটপাত থেকে দেখে-শুনে ভালো মানের কাপড় কিনলাম। এবার দুটি সুয়েটার, ট্রাউজারসহ কয়েকটি কাপড় কিনেছি। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর দাম অনেক বেশি।”
ফুটপাতের দোকানদার রুস্তম মিয়া বলেন, “এসব কাপড় আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করে হাট-বাজারে ভ্রাম্যমাণ দোকান করে বিক্রি করি। দাম কম হওয়ায় বেশি বিক্রি হচ্ছে। ঠান্ডা যত বাড়বে, চাহিদাও ততই বাড়বে।”
দোকানদার শফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা ‘গাইট’ হিসেবে কাপড় নিয়ে আসি। এখানে এনে মানভেদে বাছাই করে বিভিন্ন দামে বিক্রি করি। কম দামে ভালো মানের গরম কাপড় পেলে ক্রেতারা ভিড় করেন। তবে অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার দাম একটু বেশি হওয়ায় ব্যবসা নিয়ে চিন্তায় আছি।”
জীবননগর বাজার কমিটির সাবেক আহ্বায়ক মুন্সী মাহবুবুর রহমান বাবু বলেন, “শীতের তীব্রতা বেড়ে গেলে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে শীতার্ত মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। অতিরিক্ত ঠান্ডা নিবারণের জন্য ক্রেতারা ফুটপাতের দোকান থেকে কম দামে পোশাক কিনছেন। এতে যেমন নিম্ন আয়ের মানুষের সুবিধা হয়েছে, তেমনি এসব অস্থায়ী দোকান ব্যবসায়ীদেরও আয়ের পথ তৈরি করেছে।”
চলতি সপ্তাহে জীবননগরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে।
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

