বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে জনগণের ভোটে নির্বাচিত, জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ ও জবাবদিহিমূলক একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। এই সরকারের কাজ কোনো দলের স্বার্থ বাস্তবায়ন নয়।”
শনিবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত ‘হিন্দু প্রতিনিধি সম্মেলন ২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মাতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্যজোট।
তারেক রহমান বলেন, “স্বৈরাচারী শাসনামলে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বিএনপির বিরুদ্ধে দেড় লাখের বেশি মামলা হয়েছিল। সাত শতাধিক নেতা-কর্মীকে গুম, অপহরণ ও হত্যা করা হয়। আদালত রাতের অন্ধকারে বসিয়ে সাজানো রায় ঘোষণা করা হয়েছিল। এসব ঘটনার মূল কারণ ছিল দেশে আইনের শাসনের অনুপস্থিতি।”
তিনি বলেন, “পলাতক স্বৈরাচারের আমলে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান—কেউই নিরাপদ ছিল না। রামু ও নাসিরনগরে হামলার মতো ঘটনায় আজও কোনো বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত হয়নি। বিএনপি বরাবরই সর্বদলীয় ও সর্বধর্মীয় প্রতিনিধিদের নিয়ে নাগরিক তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছিল, কিন্তু কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।”
তারেক রহমান বলেন, “ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন ছাড়া কোনো নাগরিকেরই নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। একটি ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্রই পারে সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগুরু সবার অধিকার রক্ষা করতে।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের কিছু অংশের আচরণ দেশের জনগণের অর্জিত অধিকার ও সুযোগকে ক্ষুণ্ণ করছে। যদি দেশ আবার অস্থিতিশীল হয়, তাহলে অতীতে পরাজিত স্বৈরাচারী শক্তিগুলোর পুনর্বাসনের সুযোগ তৈরি হতে পারে।”
বিএনপি নেতার মতে, “বর্তমানে পরাজিত ফ্যাসিবাদী অপশক্তি আবারও গোপন কৌশল অবলম্বন করে গণতন্ত্রের উত্তরণের পথ বাধাগ্রস্ত করতে পারে। অন্তর্বর্তী সরকার ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।”
তিনি বলেন, “৫ আগস্টের পরাজিত শক্তি যেন কোনো দলের আড়ালে থেকে দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।”
তারেক রহমান বলেন, বিএনপি বরাবরই একটি শান্তিকামী, সহনশীল ও গণমুখী রাজনৈতিক দল। “ভিন্ন দল ও মতের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করা বিএনপির রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, “ক্ষমতায় এলে বিএনপি প্রাথমিকভাবে ৫০ লাখ নারীপ্রধান পরিবারের নামে ফ্যামিলি কার্ড ইস্যু করবে। পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকদের জন্য ফার্মার্স কার্ড দেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, “যুবসমাজের বেকারত্ব দূর করতে কারিগরি প্রশিক্ষণ ও ব্যবহারিক শিক্ষার মাধ্যমে তাদের দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করে দেশ-বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।”
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

