অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ একটি বৈষম্যমুক্ত রাষ্ট্র চায় যেখানে সকল নাগরিক সমান সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে। তিনি বলেন, “আমরা জাতি হিসেবে ব্যর্থ হতে চাই না। আমাদের তরুণরা জেগেছে, মানুষ জেগেছে, নতুন বাংলাদেশের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। তা বাস্তবায়ন না হলে এত রক্তপাত আর আত্মত্যাগের কোনো মূল্য থাকবে না।”
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, জন্ম ও ধর্ম নির্বিশেষে সবাই নাগরিক হিসেবে সমান অধিকার ভোগ করবে। তরুণ প্রজন্মের ভেতর আছে বিশ্বকে তাক লাগানোর শক্তি, তারা বন্দি বা আতঙ্কে থাকার জন্য জন্মায়নি। রাষ্ট্র তাদের স্বাধীনভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ দেবে—এটাই সরকারের দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দুর্নীতি ও বৈষম্যমুক্ত রাষ্ট্র গড়ার যে যাত্রা শুরু হয়েছে, তা সফল করতে হলে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দুর্গাপূজার প্রতীকী কাঠামোর উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “যেমন দেব-দেবীদের সম্মিলিত শক্তি অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে, তেমনি ঐক্যবদ্ধ হলে আমরাও সব অন্যায়কে পরাজিত করতে পারব।”
প্রধান উপদেষ্টা জানান, পুরো জাতিকে একটি পরিবারের মতো ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। পার্থক্য থাকবে, মতভেদ থাকবে, কিন্তু জাতি হিসেবে সবাই একই পরিবারের অংশ। তিনি জোর দিয়ে বলেন, রাষ্ট্র কারো সঙ্গে বৈষম্য করতে পারে না—সে ধনী হোক বা গরিব, যেই ধর্ম বা মতাদর্শের অনুসারীই হোক না কেন।
“সবচেয়ে বড় পরিচয় হলো নাগরিক পরিচয়। সংবিধানে লিপিবদ্ধ প্রতিটি নাগরিক অধিকার রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে,” বলেন ড. ইউনূস। তিনি আহ্বান জানান, জনগণ যেন তাদের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি উচ্চকণ্ঠে জানায়।
নিরাপত্তা বাহিনীর বেষ্টনীতে ধর্মীয় উৎসব পালনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “আমরা নিরাপদ ও বিশ্বাসভিত্তিক পরিবেশে ধর্ম পালন করতে চাই। বাহিনীর সুরক্ষার ওপর নির্ভর করে ধর্ম পালনের প্রয়োজন হওয়া রাষ্ট্রের জন্য কলঙ্কজনক।”
একুশে সংবাদ/এ.জে