আসন্ন ২৪ জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে বিগত ১৫ বছরে ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে নিহতদের তালিকা প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় শহীদ বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের বাবা মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ, ভাই আবরার ফাইয়াজ ও মামা মোহাম্মদ মোফাজ্জল হোসেন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
আবরার পরিবারের পক্ষ থেকে বিগত দেড় দশকে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের দলীয় সন্ত্রাসে নিহতদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির অনুরোধ জানানো হয়। পাশাপাশি এসব ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের দাবি জানান তারা।
শহীদ আবরার ফাহাদের বাবা বলেন, “দেশের স্বার্থে কথা বলার কারণেই আমার ছেলেকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। সে অসম পানি বণ্টনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল।”
তিনি আরও জানান, “তার মা এখনও ছেলের জন্য আর্তনাদ করেন। আমরা চাই আর কোনো মা যেন সন্তান হারিয়ে বুক খালি না করেন।”
এ সময় কুষ্টিয়ার গড়াই নদীর ওপরে একটি সেতু নির্মাণের দাবিও জানান বরকত উল্লাহ। স্থানীয় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ সেতু না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়ছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আবরারের ছোট ভাই, বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাইয়াজ বলেন, “আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখনো শিক্ষার্থীবান্ধব নয়। ল্যাব, সরঞ্জামসহ শিক্ষার পরিবেশে সংকট রয়েছে। আমরা আশা করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসব ক্ষেত্রে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।”
তিনি বুয়েটে র্যাগিং ও নিপীড়নের ঘটনার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এই প্রথম না—পূর্বেও বুয়েটে এমন ঘটনা ঘটেছে। সেসব তদন্ত ও বিচারও হওয়া উচিত।”
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আবরারকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনা জাতিকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। এ হত্যার বিচার অবশ্যই সম্পন্ন হবে।”
তিনি বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের আগে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় সংঘটিত সকল সহিংসতায় নিহতদের তালিকা প্রস্তুত করা হবে। দলীয় সন্ত্রাস ও রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে যে হত্যাকাণ্ডগুলো সংঘটিত হয়েছে, সেগুলোও তদন্তাধীন। সরকার ইতোমধ্যে এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে।”
একুশে সংবাদ//র.ন