দেশের সব সরকারি ভবনের ছাদে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে সোলার প্যানেল স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি’ শীর্ষক বৈঠকে তিনি এই নির্দেশনা দেন।
বৈঠকে উপস্থাপিত তথ্য অনুযায়ী, ইন্টারন্যাশনাল রিনিউএবল এনার্জি এজেন্সি (IRENA) এর ২০২৪ সালের প্রতিবেদনে দেখা যায়, নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার ও সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশ এখনো প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় পিছিয়ে। ভারতে ২৪ শতাংশ, পাকিস্তানে ১৭.১৬ শতাংশ এবং শ্রীলঙ্কায় ৩৯.৭ শতাংশ বিদ্যুৎ সৌরশক্তি থেকে উৎপন্ন হলেও বাংলাদেশে এ হার মাত্র ৫.৬ শতাংশ।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “জরুরি ভিত্তিতে ‘জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি’ বাস্তবায়ন করতে হবে। সরকারি ভবন, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও হাসপাতালগুলোতে রুফটপ সোলার স্থাপন বাধ্যতামূলকভাবে শুরু করতে হবে।”
তিনি বেসরকারি বিনিয়োগে এই কাজ বাস্তবায়নের সম্ভাবনাও বিবেচনায় আনার পরামর্শ দেন। বলেন, “যারা সোলার বসাবে তারা নিজেরাই রক্ষণাবেক্ষণ করবে, পরিচালনা করবে। সরকার শুধু ছাদ দেবে, বাকিটা তাদের দায়িত্ব।”
এ ছাড়া, তিনি বলেন, “যেসব প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে রুফটপ সোলার ব্যবহার করছে, তাদের অভিজ্ঞতা থেকে শিখে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে হবে এবং সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা আরও জানান, রুফটপ সোলার স্থাপন করা হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ বিল দিতে হবে না এবং সৌর প্যানেল বসানোর জন্য ব্যবহৃত ছাদ ভাড়ার বিনিময়ে প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিক সুবিধাও পাবে।
বৈঠকে আরও জানানো হয়, নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা ২০২৫ অনুসারে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ২০ শতাংশ ও ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে পূরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ৫,২৩৮ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৫৫টি স্থলভিত্তিক সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রের টেন্ডার কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যা ২০২৮ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বৈঠকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং বিদ্যুৎ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
একুশে সংবাদ/এ.জে