AB Bank
  • ঢাকা
  • সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

বিদ্রোহী চেতনায় গড়া নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ বছর



বিদ্রোহী চেতনায় গড়া নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ বছর

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী চেতনা, সাম্যের বাণী আর মানবতার আলোকবর্তিকা নিয়ে ২০০৬ সালে যাত্রা শুরু করেছিল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। ময়মনসিংহের ত্রিশালের নামাপাড়া বটতলায় অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানটি গত দুই দশকে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও গবেষণার ক্ষেত্রে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। বিদ্রোহী কবির নামে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, বরং নজরুলের আদর্শ ও চেতনার এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি।

২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় অর্থনৈতিক কমিশনের নির্বাহী কমিটির (ইসিএনইসি) এক সভায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গৃহীত হয়। ২০০৫ সালের ১ মার্চ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

অবশেষে ২০০৭ সালের ৩ জুন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। নজরুলের বিদ্রোহী চেতনা ও সাম্যের আদর্শকে ধারণ করে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য ছিল উচ্চশিক্ষার প্রসারের পাশাপাশি নজরুলের সাহিত্য ও দর্শনের প্রতি নতুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করা।

বর্তমানে ৮,০০০ এর বেশি শিক্ষার্থীর জন্য জ্ঞানের আলোকবর্তিকা এই বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে ২৫টি বিভাগের অধীনে স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রাম পরিচালিত হচ্ছে। বিজ্ঞান, কলা, সামাজিক বিজ্ঞান, ব্যবসায় প্রশাসন এবং আইন অনুষদের মতো বিভিন্ন শাখায় শিক্ষার্থীরা এখানে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে। বিশেষ করে নজরুলের সাহিত্য ও সংস্কৃতির উপর গবেষণার জন্য এখানে একটি নজরুল গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে, যা কবির সাহিত্যকর্ম ও জীবনদর্শনের গভীর অধ্যয়নের সুযোগ করে দিচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষার মানোন্নয়নে আধুনিক প্রযুক্তি ও গবেষণার উপর জোর দিয়েছে। গ্রন্থাগারে রয়েছে হাজার হাজার বই ও ডিজিটাল রিসোর্স, যা শিক্ষার্থীদের গবেষণায় সহায়তা করছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে আধুনিক ল্যাবরেটরি ও গবেষণা সুবিধা শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত। গত ২০ বছরে এই প্রতিষ্ঠান থেকে হাজারো শিক্ষার্থী স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে দেশবিদেশে কাজ করছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগত মানের প্রমাণ বহন করে।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন সাম্য, ন্যায় ও বিদ্রোহের প্রতীক। তার কবিতা ও গানে উঠে এসেছে নিপীড়িত মানুষের পক্ষে কথা বলার আহ্বান। ‘জাককানইবি’ এই চেতনাকে ধারণ করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সামাজিক ন্যায়বিচার, সমতা ও মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সেমিনার ও কর্মশালায় নজরুলের সাহিত্য ও দর্শনের প্রতিও গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রতিবছর নজরুল জয়ন্তী ও মৃত্যুবার্ষিকীতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যেখানে শিক্ষার্থীরা কবির সৃষ্টিকর্ম নিয়ে আলোচনা, গান ও নাটক পরিবেশন করে। গত ২০ বছরে ‘জাককানইবি’ উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছে। এটি বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কার অর্জন করেছে। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে গবেষণা প্রকাশ করছে, যা প্রতিষ্ঠানের গবেষণার মানকে তুলে ধরছে।

তবে, চ্যালেঞ্জের মুখেও বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে যেতে হয়েছে। অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা, অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রয়োজনিয়তা এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য আরও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা এখনও বড় চ্যালেঞ্জ। তবুও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় কাজ করে যাচ্ছে।

 

 

একুশে সংবাদ /এ.জে

Link copied!