‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল ১০টা থেকে এক ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছেন সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তাঁরা দাবি জানিয়েছেন—অবিলম্বে নতুন অধ্যাদেশটি বাতিল করতে হবে, না হলে কর্মসূচি আরও কঠোর হবে।
সকাল সাড়ে ১০টায় সচিবালয় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনকারীদের নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান বাদীউল কবীর। তিনি বলেন, “বিভিন্ন দপ্তরে কর্মবিরতি চলছে। আজকের মতো এক ঘণ্টা হলেও দাবি না মানলে ৩১ মে’র পর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”
গত সপ্তাহে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর রোববার সরকার এটি গেজেট আকারে জারি করে। মূলত এখান থেকেই চরম অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে সচিবালয় জুড়ে।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ—নতুন অধ্যাদেশে চাকরিজীবীদের নানাবিধ অধিকার সংকুচিত হয়েছে, শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থায় একতরফা ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে কর্মকর্তাদের। অনেকে এটিকে “গণচাকরি নয়, শাসকের চাকরি বানানোর আইন” বলে মন্তব্য করেন।
শুধু সচিবালয়েই নয়, ঐক্য ফোরাম জানিয়েছে—৩১ মে’র পর থেকে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনারের কার্যালয়সহ সব প্রশাসনিক ইউনিটে কর্মবিরতি পালিত হবে। মাঠ প্রশাসনের কর্মচারীদের মধ্যেও এ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
এ বিষয়ে আন্দোলনকারী এক কর্মচারী বলেন, “এই আইন চালু হলে আমরা আর চাকরিজীবী থাকব না, পরাধীন কর্মচারীতে পরিণত হব।”
এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মচারীদের দাবির বিষয়ে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার ভাষ্য, “চাকরির শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা আনতেই এই সংশোধন আনা হয়েছে। আলোচনার পথ খোলা আছে।”
তবে আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—অধ্যাদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে কর্মবিরতি চলবে, আর দাবি না মানলে আগামী সপ্তাহে পূর্ণ কর্মবিরতির দিকেই যাবে কর্মসূচি।
একুশে সংবাদ / আ.ট/এ.জে
একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
