বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট জয় করেছেন অনেকেই, তবে বাংলাদেশি তরুণ ইকরামুল হক শাকিল গড়েছেন এক অবিশ্বাস্য কীর্তি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে পদযাত্রায় দ্রুততম সময়ে ও সবচেয়ে কম বয়সে এভারেস্ট জয়ের বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন তিনি—যা কেবল বাংলাদেশের নয়, বিশ্বের পর্বতারোহণ ইতিহাসেও এক যুগান্তকারী ঘটনা।
‘সি টু সামিট’ শিরোনামে শাকিলের এই দুঃসাহসিক অভিযানে তিনি কক্সবাজারের ইনানি সৈকত থেকে যাত্রা শুরু করে প্রায় ১৩০০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছান। পুরো যাত্রা সম্পন্ন করতে তাঁর সময় লেগেছে ৯০ দিনের কম, যা পূর্বের বিশ্বরেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে।
এর আগে ১৯৯০ সালে অস্ট্রেলিয়ান অভিযাত্রী টিম ম্যাকার্টনি-স্নেপ ভারতের গঙ্গাসাগর থেকে ১২০০ কিলোমিটার হেঁটে ৯৬ দিনে এভারেস্ট জয় করেছিলেন। শাকিল সেই রেকর্ড ভেঙে আরও ১০০ কিলোমিটার বেশি পথ পাড়ি দিয়ে কম সময়ে শীর্ষে পৌঁছেছেন।

বাংলা মাউন্টেনারিং অ্যান্ড ট্রেকিং ক্লাবের (বিএমটিসি) সমন্বয়ক সাদিয়া সুলতানা শম্পা, শাকিলের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। জানা গেছে, শাকিল বর্তমানে এভারেস্টের ক্যাম্প-৪ এ অবস্থান করছেন। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বিস্তারিত তথ্য এখনো পাওয়া না গেলেও, অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন হওয়া নিশ্চিত।
শাকিল গত ২৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের ইনানি সৈকত থেকে যাত্রা শুরু করেন। সেখান থেকে তিনি বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের বিভিন্ন দুর্গম পথ, ট্রেইল এবং পাহাড়ি অঞ্চল পাড়ি দিয়ে ২৯,০৩১ ফুট উচ্চতার এভারেস্ট জয় করেন।
এই সাফল্যের মাধ্যমে শাকিল কেবল নিজের স্বপ্নপূরণ করেননি, বরং প্রমাণ করে দিয়েছেন—সাহস, অধ্যবসায় ও পরিকল্পনা থাকলে এক অসম্ভব পথও জয় করা সম্ভব।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শাকিলের এই অর্জন আন্তর্জাতিক পর্বতারোহণ মহলে বাংলাদেশের জন্য গৌরব বয়ে আনবে। একদিকে যেখানে তার বয়স এবং পথের দূরত্ব তাকে অনন্য করে তুলেছে, অন্যদিকে পুরো অভিযানের ‘সি টু সামিট’ ধারণাটিও নজিরবিহীন।
দেশবাসীর পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে অভিনন্দন বার্তা। সরকারিভাবে শাকিলকে সংবর্ধনা দেওয়ার প্রস্তুতির কথাও শোনা যাচ্ছে।
এই তরুণ পর্বতারোহীর সাফল্য নতুন প্রজন্মের জন্য হতে পারে এক উজ্জ্বল অনুপ্রেরণা।
একুশে সংবাদ/ঢ.প/এ.জে