AB Bank
ঢাকা রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী
স্বর্ণার আইফোন-ডলার চুরি

প্রতারণা করে নারী ক্রিকেটারকে বিয়ে করেন আযান


Ekushey Sangbad
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
০৮:১৮ পিএম, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৪
প্রতারণা করে নারী ক্রিকেটারকে বিয়ে করেন আযান

বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের অলরাউন্ডার স্বর্ণা আক্তারের বাসায় চুরির ঘটনায় মো. আল আমিন দেওয়ান ওরফে আযান (২৯) গ্রেফতার হয়েছেন। একই সঙ্গে উদ্ধার হয় স্বর্ণার চুরি যাওয়া আইফোনও। র‍্যাব বলছে, গ্রেফতার যুবক এর আগে গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা পরিচয়ে অপর এক নারী ক্রিকেটারকে বিয়ে করেন। মূলত তাদের পরিচয় হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এর ১৭ দিনের মাথায় বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন দুজন। এই সুযোগে অন্য নারী ক্রিকেটারদের বাসায় যাতায়াত ছিল ওই যুবকের।

বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান বাহিনীটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

র‍্যাব জানায়, গ্রেফতার আল আমিন প্রথমে নিজেকে গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা পরিচয় দেন। এরপর ছুটিতে আছেন বলে কাপড়ের ব্যবসা করছেন- এ তথ্য দিয়ে এক নারী ক্রিকেটার সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচিত হন। পরে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। একপর‍্যায়ে পরিচয়ের ১৭ দিনের মাথায় ১২ জানুয়ারি আল আমিন ওই নারী ক্রিকেটারকে বিয়ে করেন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, অলরাউন্ডার স্বর্ণা আক্তারের সঙ্গে ওই নারী ক্রিকেটারসহ চারজন প্রায় তিন বছর ধরে রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করে আসছিলেন। বিয়ের পর কৌশলে ওই নারী ক্রিকেটারকে নিয়ে আল আমিন একই ফ্ল্যাটে আলাদা রুমে ওঠেন। এসময় অন্য ক্রিকেটারদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। একপর‍্যায়ে ব্যবসায়ীক কারণ দেখিয়ে পরিশোধের আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন সময় তাদের কাছ থেকে প্রায় দুই লাখ টাকা নেন।

র‍্যাব জানায়, ২৯ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিন রুমমেটসহ সতীর্থ খেলোয়াড়দের নিয়ে তেজকুনীপাড়া খেলাঘর মাঠে অনুশীলনে যান ক্রিকেটার স্বর্ণা। এসময় বাসায় অবস্থান করছিলেন আল আমিন। ক্রিকেটাররা চলে যাওয়ার পর স্বর্ণার রুমের ওয়ারড্রবের তালা ভেঙে তিন হাজার ডলার, একটি চেক বই, ভিসা কার্ড নিয়ে নেন। একই সঙ্গে অন্য নারী ক্রিকেটারের ব্যাগ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টাকা নিয়ে তেজকুনীপাড়া খেলাঘর মাঠে যান আল আমিন। এসময় ক্রিকেটারদের অনুশীলনের ভিডিও করার কথা বলে স্বর্ণার আইফোন নিয়ে কিছুক্ষণ ছবি তুলে কৌশলে মাঠ থেকে পালিয়ে যান তিনি।

র‍্যাব আরও জানায়, ঘটনার পর আইফোনটি রাজধানীর একটি পুরাতন মালামাল বিক্রির মার্কেটে ১১ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। এরপর বাসে করে ঢাকা থেকে প্রথমে রংপুর গিয়ে রাতে হোটেলে অবস্থান করেন। পরেরদিন রংপুর থেকে দিনাজপুর গিয়ে হোটেলে অবস্থান করেন।

এদিকে অনুশীলন শেষে স্বর্ণা আক্তার আল আমিনকে মাঠে না পেয়ে অন্য ক্রিকেটারদের মোবাইল থেকে তার আইফোনে কল দিলে সেটি বন্ধ পান। এরপর বাসায় ফিরে ফ্লাটের মূল দরজা লক করা অবস্থায় দেখতে পান। এসময় বাসার দারোয়ানের সহযোগিতায় তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন স্বর্ণা। তখন তিনি তার রুমের সব জিনিসপত্র এলোমেলো অবস্থায় দেখতে পান। এরপর থানায় মামলা করেন স্বর্ণা আক্তার।

মঙ্গলবার রাতে র‍্যাব-১৩ ও র‍্যাব-২ এর একটি দল দিনাজপুরে অভিযান চালিয়ে আল আমিনকে গ্রেফতার করে। এসময় উদ্ধার হয় চারটি আইফোনসহ পাঁচটি মোবাইল, প্রাইম ব্যাংকের একটি চেক বইয়ের পাতা, প্রাইম ব্যাংকের একটি মাস্টার কার্ড, বেশকিছু বৈদেশিক মুদ্রা, তিনটি হাত ঘড়ি, চারটি চেইন, একটি নোজপিন, একটি ব্রেসলেট, দুটি আংটি ও একটি হ্যান্ডব্যাগ।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আল আমিন র‍্যাবকে জানান, তিনি মূলত প্রতারণার উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন আইডি খুলে নিজেকে বড় ব্যবসায়ী পরিচয় দিতেন। সুন্দরী নারীদের আকৃষ্ট করতে নিয়মিত বিভিন্ন স্টাইলে ছবি পোস্ট করতেন। এছাড়া নিজেকে প্রদর্শনের জন্য টিকটক ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করতেন। এভাবে নারীদের সঙ্গে কৌশলে গড়ে তুলতেন সম্পর্ক। পরবর্তীতে আল আমিন ওই নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আস্থা অর্জন করে নিয়মিত দেখা করতেন। অনেক ক্ষেত্রে কোনো নারীকে বিয়ে করে বা বিয়ে না করে সুবিধাজনক সময়ে তাদের নগদ অর্থসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে আত্মগোপনে চলে যেতেন। এসময় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখতে তার ফেসবুক আইডি ডিলিট করে দিতেন। পরবর্তীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কিছুদিন পর আবার অন্য কারো সঙ্গে প্রতারণার জন্য আরেকটি ফেসবুক আইডি খুলতেন।

র‍্যাবের মুখপাত্র আরও বলেন, আল আমিন ২০১১ সালে রাজধানীর একটি স্কুল থেকে এসএসসি সম্পন্ন করেছেন বলে জানান। তিনি রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে কাপড়ের দোকানে চাকরি করতেন। পরবর্তীতে ২০১৬-২০১৭ সাল থেকে প্রতারণা করতে থাকেন। প্রতারণার পর পার্শ্ববর্তী দেশে আত্মগোপনে চলে যেতেন। এরমধ্যে আল আমিন ২০২২ সালে প্রথম বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর তার প্রতারণার বিষয়টি জানতে পেরে প্রথম স্ত্রী বিয়ে বিচ্ছেদ করেন।

তার বিরুদ্ধে রাজধানী ঢাকা ও চাঁদপুরের বিভিন্ন থানায় চারটির বেশি মামলা রয়েছে এবং এসব মামলায় তিনবার বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছেন বলে জানায় র‍্যাব।


একুশে সংবাদ/জ.ন.প্র/জাহা 

Link copied!