গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার মোচনা ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামের
এক রাজমিস্ত্রী আবিষ্কার করলেন আকাশের তারা নির্ণয়ের এক অভিনব ঘড়ি।
দির্ঘ এগারো বছর তিনি গবেষণাগারে গবেষণার মাধ্যমে এই অভিনব ঘড়ি
উদ্ভাবন করেন। নাম তার ওসমান খাঁন।
এই অভিনব ঘড়ি বিষয়ে তিনি বলেন, আমি দির্ঘ ১১ বছর আমার
গবেষণাগারে গবেষণা করে এমন একটি ঘড়ি উদ্ভাবন করেছি যেটা
আমাদের পৃথিবী থেকে দিন-রাত মিলিয়ে যে তারা গুলো আকাশে দেখতে
পাই সে-ই তারাগুলোই এর মধ্যে দেখা যাবে।
মহাকাশে অগণিতিক অজস্র তারা রয়েছে। যা অসংখ তারা খালি চোখে
দেখা যায় না। তারপরও যতদুর দেখা যায় আমি ১১বছর ধরে প্রতিরাতে আকাশের
তারার সাথে মিল রেখে এই ঘড়িতে মানচিত্রকারে এক একটা করে তারার
প্রতিকৃতি স্থাপন করছি। আমাদের পৃথিবী থেকে আকাশে যে যে স্থানে
যে তারা গুলো দেখতে পাওয়া যায় ঠিক সেই সে-ই স্থানেই সেই সময়ে এই
ঘড়েিত ( আলো দ্বারা সৃষ্ট)ওই তারা গুলো জ্বলে উঠবে।
পৃথিবীটা ঘূর্ণয়নের ফলে তারা গুলোর দেখার পরিবর্তন ঘটে যেমন জুন-
জুলাই মাসে আকাশে যে তারাগুলো যে স্থানে দেখতে পাওয়া যায় আগষ্ট-
সেপ্টেম্বর মাসে সেখানে সেই তারা গুলো দেখতে পাবো না। সেখানে অন্য
তারা দেখা যাবে। এই ঘড়ির মধ্যে একই অবস্থা , মাস অনুযায়ী ঘরির মধ্যে
তারার পরিবর্তন ঘটবে। আগষ্ট -সেপ্টেম্বর মাসে আকাশে যেখানে যে
তারাগুলো দেখতে পাওয়া যাবে ঠিক সেই স্থানেই ঘরির মধ্যে সে-ই তারা গুলো
দেখতে পাওয়া যাবে। সন্ধার সময় যে তারা গুলো আকাশে দেখা যাবে, রাতে
কিন্তু সেই স্থানে সেই তারা গুলো দেখতে পাওয়া যাবে না। অন্য তারা দেখা
যাবে। আমার ঘড়িতেও সন্ধ্যায় যে তারাগুলো দেখা যাবে, রাতে কিন্তু সেই
স্থানে সেই তারা গুলো দেখা যাবে না অন্য তারা গুলো দেখা যাবে।
আকাশের তারার সাথে মিল রেখেই এই ঘড়ি তৈরি করেছি।
যেমন ধরুন আজ রাত ১০টায় আকাশে যে যে স্থানে তারা গুলো অবস্থান করবে।
ঠিক সেই স্থানেই এই ঘড়িতেও তারাগুলোর প্রতিকৃতি জ্বলে উঠবে। মনে
হবে ঘড়িটা একটা আকাশ।
তিনি আরো বলেন,আমরা সূর্যের আলোর জন্য দিনের তারা গুলো আকাশে
দেখতে পাই না। কোন তারাগুলো কোন স্থানে আছে। এই ঘড়িটা নির্ণয়
করে দিবে দিনের বেলায় কোন স্থানে কোন তারাগুলো অবস্থান করছে।পৃথিবীর
ভূ পৃষ্ঠ থেকে আকাশের সব তারা দেখা যাবেনা পাঁচের একাশ দেখা যাবে বলে
আমি মনে করি। চেষ্টা করলে ঘড়ির মানচিত্রে আকাশের সমস্ত তারাই স্থাপন
করা যায়,যে গুলো খালি চোখে দেখতে পেড়েছি সেগুলোই স্থাপন করেছি।
শুধু তারা নির্ণয় নয়, এই ঘড়িতে আরো কিছু মজার বিষয় আছে ,যেমন
আজ থেকে আগামী পনের দিন পর চন্দ্রের কাছে কোন তারাগুলো অবস্থান
করবে সে গুলো আগের থেকেই দেখা যাবে ঘড়িতে।
এছাড়া আগামী বছরএইদিনে এই সময়ে অন্যান্য গ্রহ গুলো কে কোন
অবস্থায় থাকতে পারে সেই সিগন্যাল ও দিয়ে দিবে এই ঘড়ি। ঘড়িতে
২৪টি কাটা আছে এবং বছর,মাস,সপ্তাহ, দিন সময় সবকিছুই নির্ধারণ
করা হয়েছে। ,ঘড়িটা এখনো এনালগ হিসেবে কাজ করে,হাতে চালাতে হয়।
২ এটাকে ডিজিটাল রুপে করতে হলে কাটা লাগাতে হবে এবং অন্যান্য
যন্ত্রপাতি সেট করতে হবে, তাহলেই পূর্ণাঙ্গ ভাবে প্রকাশ পাবে আকাশের
তারা নির্ণয়ের ঘড়ি।
এইঅভাবনীয় ঘড়ি দেখতে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সোয়ান মাহমুদ
ও রাজীব বলেন, অভাবনীয় আবিষ্কার, আকাশের তারা নিয়ে গবেষণা করে যে
ঘড়ি আবিষ্কার করেছেন তা সত্যিই চমক লাগার বিষয়। এই ধরনের ঘড়ি
এখনও দেখিনি। তিনি দীর্ঘদিন গবেষণা করে এই ঘড়িটা আবিষ্কার করেন।
দেখাগেল রাত ৯টার দিকে আকাশে যে যে স্থানে তারা গুলো জ্বল জ্বল করে দেখা
যাচ্ছে, ঠিক সেই স্থানেই ঘড়ির মানচিত্রের উপর ওই তারাগুলো জ্বলে উঠছে।
রাতের তারা দেখতে হলে আকাশের তারা দেখার দরকার নেই ঘড়ির মানচিত্রের উপর
তাকালেই দেখা যাচ্ছে কোন তারাটা কোন স্থানে আছে। তার এই
আবিষ্কারের আমরা মুগ্ধ।
ওসমান খান একজন সাধারণ পরিবারের ছেলে। পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী। তবে
এখন রাজমিস্ত্রী ছেড়ে স্কাবেটর কাজের সাথে জড়িত আছেন। তিনি
প্রাতিষ্ঠানিক তেমন কোন লেখা পড়া করতে পারেননি। তিনি উপজেলার
ডুমুরিয়া গ্রামের মোঃ আওলাত খানের ছেলে।
তার ইচ্ছা এই ঘড়িটা বিশেষজ্ঞদের দেখানো। তাঁরা দেখুক আমার থিওরি
ঠিক আছে কিনা। যদি প্রমাণ সহ ঘড়ির থিওরি ঠিক থাকে তাহলে এই
ধরনের ঘড়ি সবাই ব্যবহার করে তাঁরা ঘরে বসেই সময় সহ আকাশের তারা
নির্ণয়, দিনের বেলায় তারাগুলো কথায় অবস্থান, দিনে চাঁদের অবস্থান
কোথায় ইত্যদি সবকিছুই জানা সম্ভব।
মুকসুদপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো: জোবায়ের রহমান রাশেদ
বলেন, না এই ঘড়ির বিষয়ে আমাকে কেই এখনো জানায়নি,আর সে এখনো
আমাকে এই ঘড়িটি দেখায়নি,ওনি আমাকে ঘড়িটি দেখাবে ,দেখার পর
প্রজেক্টটি কোথাও পাঠাতে পারব বা কোন কিছু করতে পারব কিনা দেখতে
হবে।এই প্রজেক্টটির বিষয়ে আমাকে আগে জানাতে হবে। আমার আগে
জানতে হবে।
একুশে সংবাদ/সুশান্ত