জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির রায় আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঘোষণা করা হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল সকাল ১১টায় রায় ঘোষণা করবেন।
রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ঢাকাসহ চার জেলায় সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। প্রসিকিউশন তিন আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করছে। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক, আর চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হয়ে আদালতে উপস্থিত।
মামলার শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এম.এইচ. তামিমসহ অন্যান্য প্রসিকিউটর উপস্থিত ছিলেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী মো. আমির হোসেন এবং জায়েদ বিন আমজাদ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
মামলায় মোট ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের পরিবার, রাজনৈতিক নেতারা এবং সাংবাদিকরা। প্রসিকিউশন পাঁচটি অভিযোগ আনে, যার মধ্যে রয়েছে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানো, হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার, রংপুরে এক ছাত্র হত্যার ঘটনা, ঢাকার ছয়জনকে হত্যা এবং আশুলিয়ায় নিরীহ ছয়জনকে আগুনে পোড়ানোর ঘটনা।
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং চিফ প্রসিকিউটর উভয়ই শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রার্থনা করেন। রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন তাদের খালাসের দাবি করেন।
রায় বিশ্বব্যাপী সরাসরি দেখা যাবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), রয়টার্স এবং ট্রাইব্যুনালের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে সম্প্রচার করা হবে। এছাড়া ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বড় স্ক্রিনে লাইভ দেখার ব্যবস্থা করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা হাইকোর্ট এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। গত কয়েক দিনে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ও বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। দেশের গণপরিবহন সচল রাখতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানান, কেউ বাসে আগুন দেয় বা ককটেল নিক্ষেপ করে পুলিশকে আক্রমণ করলে গুলি চালানোর নির্দেশ আছে। তিনি বলেন, “এটি আইনে স্বীকৃত এবং পুলিশকে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
একুশে সংবাদ//এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

