মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের রায়কে কেন্দ্র করে ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা জোরদার করতে সেনাবাহিনী মোতায়েনের অনুরোধ জানিয়ে সেনাসদরে চিঠি পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
রোববার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এ চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঘোষণা হবে চব্বিশের জুলাই গণহত্যা–সংক্রান্ত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার বহুল প্রত্যাশিত রায়। ঐতিহাসিক এই রায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে; পাশাপাশি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বড় পর্দায়ও রায় দেখার আয়োজন করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের ওপর জাতির নজর। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও রায়কে কেন্দ্র করে বাড়তি আগ্রহ রয়েছে। তাই রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বাড়তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনা মোতায়েনের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
গত ১৩ নভেম্বর দুপুর ১২টা ৯ মিনিটে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের প্যানেল রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেন। অন্যান্য সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম, ফারুক আহাম্মদসহ অন্যান্যরা। গত ২৩ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সমাপনী বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এরপর রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী এবং স্টেট ডিফেন্সের জবাব যুক্তিতর্ক শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য হয়।
মামলায় শেখ হাসিনা, কামাল ও সাবেক আইজিপি মামুনের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়— উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যা এবং আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো। প্রায় আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার আনুষ্ঠানিক অভিযোগের মধ্যে তথ্যসূত্র রয়েছে দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠায়; দালিলিক প্রমাণ চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠায়; শহীদদের তালিকা দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠায়। মোট ৮৪ সাক্ষীর মধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন ৫৪ জন।
সাবেক আইজিপি মামুন রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁর বিষয়ে সিদ্ধান্ত ট্রাইব্যুনালের ওপর ছেড়ে দিয়েছে প্রসিকিউশন, তবে তাঁর আইনজীবী খালাস চেয়েছেন।
সব মিলিয়ে জুলাই গণহত্যা–সংক্রান্ত প্রথম কোনো রায় শুনতে যাচ্ছে দেশ। রায়ের দিনেই স্পষ্ট হবে— দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ার পর তিন আসামির ভাগ্যে কী অপেক্ষা করছে।
একুশে সংবাদ//এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

