অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি, নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত ক্ষমতা পুরোপুরি সুপ্রিম কোর্টের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সর্বোচ্চ আদালতের জন্য আলাদা সচিবালয় গঠনের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে, যা তিন মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে ২০১৭ সালে প্রণীত বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করা হয়। এর ফলে ভবিষ্যতে অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলা ও বদলি সংক্রান্ত বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টকে আর রাষ্ট্রপতির অনুমতির অপেক্ষায় থাকতে হবে না।
এর আগে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ এবং বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় গঠনের বৈধতা নিয়ে আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
খসড়ায় বলা হয়েছে, সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে তদারকির জন্য একটি স্বাধীন সচিবালয় প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য। এটি কোনো মন্ত্রণালয় বা সরকারি বিভাগের অধীনে থাকবে না। প্রধান বিচারপতির তত্ত্বাবধানে একজন সচিব এবং প্রয়োজনীয় কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে সচিবালয় গঠিত হবে। সচিবের পদ মর্যাদা হবে সরকারের সিনিয়র সচিবের সমপর্যায়ের।
অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন,আদালতের সংখ্যা, এখতিয়ার ও কাঠামো নির্ধারণ,বিচারকদের নিয়োগ, বদলি, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা,বাজেট প্রণয়ন ও ব্যয় তদারকি, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ, পদায়ন ও প্রশিক্ষণ,বিচার বিভাগের মানোন্নয়ন ও সংস্কারে গবেষণা পরিচালনা।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের বাজেট অনুমোদনের চূড়ান্ত ক্ষমতা থাকবে প্রধান বিচারপতির হাতে। বিচার প্রশাসনকে আরও কার্যকর করতে প্রয়োজনে তিনি বিচারপতিদের সমন্বয়ে বিভিন্ন কমিটি গঠন করতে পারবেন।
রায়ে উল্লেখ করা হয়, সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদে যে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণকে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা সেই নীতিরই বাস্তবায়ন। এছাড়া, ঐতিহাসিক মাসদার হোসেন মামলার নির্দেশনার সঙ্গেও এ উদ্যোগ সামঞ্জস্যপূর্ণ।
একুশে সংবাদ/কা.বে/এ.জে