দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বন্ধে তাৎক্ষণিক ও শর্তহীন যুদ্ধবিরতিতে একমত হয়েছে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম সোমবার (২৮ জুলাই) এই গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতার ঘোষণা দেন।
মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজায়ায় আনোয়ারের সরকারি বাসভবনে বৈঠকে বসেন থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম উইচায়াচাই ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত। আলোচনা শেষে আনোয়ার জানান, "এটি দুই দেশের জন্য ইতিবাচক অগ্রগতি। এই আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রতিনিধিরাও ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলেন।"
সাম্প্রতিক সহিংসতায় দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক হতাহত হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৫ জন এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার মানুষ।
রোববার থাইল্যান্ড অভিযোগ করে, কম্বোডিয়া সিসাকেত প্রদেশে রকেট হামলা চালিয়ে একজনকে হত্যা এবং আরও একজনকে আহত করেছে। থাই সেনাবাহিনী দাবি করেছে, কম্বোডিয়ান স্নাইপাররা একটি বিতর্কিত সীমান্তমন্দির এলাকায় অবস্থান নিয়ে গোলাবর্ষণ করছে।
আল-জাজিরার বরাত দিয়ে জানা গেছে, শান্তি আলোচনার সময়ও থাইল্যান্ডের সুরিন প্রদেশে গোলাবর্ষণ অব্যাহত ছিল, পাশাপাশি সামরিক প্রস্তুতিও জোরদার করা হয়।
থাই সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল রিচা সুকসুওয়ান জানান, সোমবার ভোরে কম্বোডিয়ার ওডার মেঞ্চেই এলাকায় নতুন করে গোলাগুলি শুরু হয়। অপরদিকে, কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মালি সোচেতা পাল্টা অভিযোগ করেন, থাইল্যান্ড অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে তাদের ভূখণ্ডে ভারী অস্ত্র ব্যবহার করছে এবং আকাশপথে ধোঁয়ার বোমা ফেলছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, শান্তিপ্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধি দল মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতারাও আলোচনায় সরাসরি উপস্থিত ছিলেন।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, "আমার প্রধান অগ্রাধিকার হচ্ছে, যত দ্রুত সম্ভব এই সংঘর্ষ বন্ধ করা এবং যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা।"
উল্লেখ্য, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সীমান্তবর্তী একটি প্রাচীন মন্দির ও সংলগ্ন ভূমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলছে, যা সময়-সময়ে সংঘাতের রূপ নেয়। তবে সাম্প্রতিক সহিংসতা তা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে এনেছে।
একুশে সংবাদ/এ.জে