মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে শিশুর নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত নানা রোগ। তবে এ পর্যায়ে শহরের তুলনায় আক্রান্তের দিক থেকে এগিয়ে আছে গ্রামাঞ্চলের শিশুরা। সামনের দিনে শীত আরও বাড়লে সংকট সামাল দেয়া কঠিন হতে পারে - এমন আশঙ্কা করে বিশেষজ্ঞদের। কাজেই সময় থাকতে সচেতন হতে হবে অভিভাবকদের। শীত থেকে বাঁচতে গরম কাপড় পরাসহ শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতালের বিছানায় শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে যুদ্ধ করছে দুমাস বয়সী শিশু রবিউল। সমস্যার শুরু জ্বর ও কাশি দিয়ে। তিন দিন না যেতেই শরীরের অবস্থা হয়ে যায় আরও খারাপ। স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে অসুস্থ সন্তানকে জামালপুর থেকে নিয়ে আসেন ঢাকায় বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে। রবিউলের মতো এ হাসপাতালটিতে নিউমোনিয়া নিয়ে ভর্তি শিশুর অধিকাংশই ঢাকার বাইরের।
শিশু হাসপাতালের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি মাসের প্রথম ২০ দিনেই নিউমোনিয়া নিয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়েছে আড়াইশর বেশি। এভাবে চলতে থাকলে গতবছরের পরিসংখ্যানকেও ছাড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা এর পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলমের।
এ সময়ে নিউমোনিয়ার পাশাপাশি ব্রংকিওলাইটিস ও অ্যাজমাসহ অন্যান্য রোগের প্রকোপ দেখা দেয়। এগুলো প্রতিরোধে অভিভাবকদের আরও বেশি সচেতন থাকার পরামর্শ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের।
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সারাবন তহুরার মতে, শীতকালে একটু কাশি, সর্দি বা জ্বর হলে সবাই মনে করেন সাধারণ ব্যাপার; ঠিক হয়ে যাবে। অভিভাবকরা খুব একটা গুরুত্ব দিতে চান না। কিন্তু এভাবেই তিন দিন পার হয়ে যাওয়ার পর বাচ্চার যখন খিঁচুনি উঠে যায়, খাওয়া বন্ধ করে দেয়, পানি শূন্যতা দেখা দেয়, তখন হাসপাতালে এসে চিকিৎসা সেবা নিলেও ভালো হতে অনেক সময় লাগে।
শিশুর যাতে শীত না লাগে, সেই ব্যবস্থা নিতে অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ জানান শ্যামলির ২৫০ শয্যা টিবি হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার। তিনি বলেন, শিশুকে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করানো বা খাওয়ানো যাবে না। চেষ্টা করতে হবে সবসময় গরম পানি ও গরম খাবার দিতে। আর বাইরে গেলে গরম কাপড় পরাতে হবে। এছাড়া সুষম ও পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাবার খাওয়ানোর ওপর জোর দেন এ চিকিৎসক।
এ সময়ে আক্রান্ত শিশু থেকে অন্য শিশুদের আলাদা রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
একুশে সংবাদ/বিএইচ