ঢাকায় সফররত চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও ও অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দুটি সমঝোতা স্মারক (MoU) সই হয়েছে। শনিবার (৩১ মে) বিকেলে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এ বৈঠক হয়।
সই হওয়া সমঝোতা স্মারক দুটি হলো— অবাধ বাণিজ্য প্রসারে ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠন এবং ই-কমার্সে পারস্পরিক সহযোগিতা। উভয় দেশের প্রতিনিধি হিসেবে চুক্তিতে সই করেন শেখ বশিরউদ্দীন ও ওয়াং ওয়েনতাও।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কৃষিখাতে চীনের ড্রোন প্রযুক্তি সহায়তা কামনা করা হয়। বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, সার, বীজ বপন, কীটনাশক ছিটানো ও ফসল পর্যবেক্ষণে ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষিতে বিপ্লব সম্ভব। জবাবে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, স্মার্ট কৃষি ও ড্রোন প্রযুক্তিতে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রস্তুত চীন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও জানান, বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমা থাকা সত্ত্বেও আধুনিক ফিশিং জাহাজ ও প্রযুক্তির অভাবে এই খাতের পুরো সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। তাই আধুনিক ফিশিং জাহাজ ও মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ প্রযুক্তিতে চীনের সহায়তা প্রত্যাশা করেন তিনি। এ বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, মৎস্য ও সমুদ্রসম্পদ আহরণে চীন সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।
এছাড়া চামড়াজাত শিল্প, হালকা প্রকৌশল, কৃষি যন্ত্রপাতি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও ওষুধ শিল্পে চীনা বিনিয়োগ প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ। চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে চীন ইতোমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে এবং ভবিষ্যতে এই সম্পর্ক আরও গভীর হবে।
বৈঠকে চীনের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশটির রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আউটওয়ার্ড ইনভেস্টমেন্ট ও এশিয়ান অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টের মহাপরিচালকরা। বাংলাদেশ থেকে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব, শিল্প সচিব, কৃষি সচিব ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যানসহ অনেকে।
এর আগে শনিবার দুপুরে ২০০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে ঢাকায় পৌঁছান চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও। প্রতিনিধিদলে ছিলেন ১০০ জন চীনা ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী। সফরকালে রোববার পাঁচটি সেশনে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ম্যাচমেকিং বৈঠক এবং সোমবার বাংলাদেশ-চীন যৌথ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
একুশে সংবাদ / আ.ট/এ.জে