AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান দুবাই থেকে নিয়ন্ত্রণ করে রাজধানীর সন্ত্রাসী কর্মকান্ড


Ekushey Sangbad
নিজস্ব প্রতিবেদক
০২:২০ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২১
শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান দুবাই থেকে নিয়ন্ত্রণ করে রাজধানীর সন্ত্রাসী কর্মকান্ড

ছবি: একুশে সংবাদ

বেলাল দেওয়ান: ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গুলি করে চাঁদা দাবি। শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান গ্রুপের ৭ ক্যাডারকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ৩ টি আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

২৭ ডিসেম্বর বেলা ১২ টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ব্রিফিং করেন ডিআইজি একেএম হাফিজ আক্তার। 

তিনি বলেন,২৬ ডিসেম্বর দিনে এবং রাতে এডিসি গুলশান বিভাগের তত্ত্বাবধানে গুলশান জোনাল টিম পার্বত্য বান্দরবান এবং রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে চাঁদাবাজি  চক্রের ৭ জনকে  দুইটি বিদেশি পিস্তল, একটি রিভলবার, ১৩ রাউন্ড গুলি এবং ৬০০০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা সবাই দুবাই অবস্থানরত সন্ত্রাসী জিসান ও তার ভাই শামীমের শিষ্য এবং কাশিমপুর কারাগারে আটক সন্ত্রাসী মামুন এবং মুন্নার সহযোগী।

গত ১৯/১১/২০১ তারিখ সন্ধ্যা বেলায় পূর্ব বাড্ডা আলিফ নগর এলাকার জেনারেটর ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম খান টুটুলকে সন্ধ্যা অনুমান ৬:৫১ ঘটিকায় অজ্ঞাতনামা একজন ব্যক্তি ফোন করে পরবর্তী দিনে ৫ লক্ষ টাকা প্রস্তুত রাখতে বলে এবং চাঁদার টাকা সঠিক সময় না পেলে সন্তানসহ পরিবারের উপরে হামলা করা হবে বলে হুমকি দেয়।

পরবর্তীতে ২১/১১/২০২১ তারিখে বিকাল অনুমান ৩:১০ ঘটিকার সময় টুটুলের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অজ্ঞাতনামা দুই/ তিনজন ব্যক্তি প্রবেশ করে চাঁদার টাকা দাবি করে এবং কোমর থেকে পিস্তল বের করে গুলি করে চলে যায়। 

প্রায় এক ঘণ্টা পরে অজ্ঞাতনামা ঐ ব্যক্তি ফোন করে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং গুলির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে এক দিনের সময় বেঁধে দিয়ে তার সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের জীবননাশের হুমকি দেয়। এই প্রেক্ষিতে বাড্ডা থানায় মামলা রুজু হলে গুলশান গোয়েন্দা বিভাগ ছায়া তদন্ত শুরু করে। 

সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা, বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ এবং তথ্য- প্রযুক্তির  সহায়তায় জড়িত গ্রুপটিকে সনাক্ত করে প্রথমত রামপুরা এলাকা থেকে গত ২১/১২/২০১ তারিখে ঘটনায় অস্ত্র ব্যবহার করে গুলি করা সন্ত্রাসী মোঃ নাসির (২১) কে গ্রেপ্তার করা হয় । 

উক্ত আসামি নিজেকে জড়িয়ে গত ২২/১২/২০২১ তারিখ বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় ফৌজদারি কার্যবিধির-১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। শুটার নাসির জবানবন্দিতে ঘটনার পরিকল্পনাকারী, অস্ত্র সরবরাহকারী এবং সহযোগী আসামি হিসেবে ওমর খৈয়াম নিরু , জীবন হোসেন, ফারহান মাসুদ সোহান, নাঈম, কাওছার আহমেদ ইমন-দের সংশ্লিষ্টতা উল্লেখ করে বিস্তারিত বক্তব্য প্রদান করে। 

শ্যুটার নাসিরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী গুলশান জোনের টিম লিডারের নেতৃত্ত্বে পার্বত্য বান্দরবান জেলার দুর্গম এলাকা থেকে গত ২৬/১২/২১ তারিখ দুপুর ১.৫ ঘটিকায় কাওছার আহমেদ ইমনকে (২৪) গ্রেফতার করা হয় এবং তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী বাড্ডার বেরাইদ এলাকায় সন্ত্রাসীদের ভাড়া করা বাসা থেকে ২৬/১২/২০২১ তারিখ রাত্র ১১:৫৫ ঘটিকায় মোহাম্মদ জীবন হোসেন(২৫) কে একটি পিস্তল, চার রাউন্ড গুলিসহ একটি ম্যাগাজিন ও ১০০০ পিস ইয়াবা, ওমর খৈয়াম নিরুকে একটি রিভলবার, চার রাউন্ড  পয়েন্ট ২২ বোরের রিভলভারের গুলিসহ একটি ম্যাগাজিন ও ৪০০ পিছ ইয়াবা, ফারহান মাসুদ সোহানকে একটি বিদেশী পিস্তল, ৫ রাউন্ড গুলি এবং ৬০০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করা হয়। কাউসার আহমেদ ইমনের দেখানো মোতাবেক তার ঘরের উত্তর-পশ্চিম কোনের একটি ব্যাকপ্যাক এর ভেতর থেকে দুই হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয় এবং তার ঘরে থাকা আসামি মোঃ আসালামকে ২০০০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। 

দুবাইয়ে অবস্থানরত শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান ও ভাই শামিম এবং কাশিমপুর কারাগারে থাকা ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সন্ত্রাসী মামুনের ক্যাডার ইমন ,জীবন এবং নিরুর টাকার প্রয়োজন হলে তারা এলাকার বড় ভাই  মোঃ মহিনউদ্দিন জালালের (৪৩) কাছে যায় এবং একটি 'কাজ' অর্থাৎ 'টার্গেট' দেয়ার জন্য বলে। পরবর্তীতে মোঃ মহিন উদ্দিন জালাল জেনারেটর ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম টুটুল এর খোঁজ দেয়। নীরু, জীবন ,ইমন কাজটি করার জন্য  নাসিরকে ঠিক করে। ক্যাডার জীবন হোসেন  কিভাবে গুলি করতে হবে অর্থাৎ পিস্তল চালাতে হয় তা বাসের হেলপার নাসিরকে শিখিয়ে দেয়।

আসামীদেরকে  জিজ্ঞাসাবাদকালে তারা দুবাইপ্রবাসী চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের ক্যাডার বলে স্বীকার করে। তথ্য প্রযুক্তির উপাত্ত বিশ্লেষণে দুবাই প্রবাসী চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের সাথে তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। দক্ষিণ-বাড্ডায় ২০০৬ সালের ফোর মার্ডার মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত এবং বর্তমানে কাশিমপুর কারাগারে অবস্থানরত মামুন ছক্কা মামুনের সাথে তাদের সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া যায়। মূলত মামুন ছক্কা মামুন এর মাধ্যমে জিসানের সাথে জীবন গংদের পরিচয় হয়। 

দুবাইয়ে অবস্থানরত জিসান কাশিমপুর কারাগারে অবস্থানরত আসামি  মামুনের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে। পরবর্তীতে জীবনের মাধ্যমে সন্ত্রাসী জিসানের সাথে সোহান এবং অন্যান্যদের পরিচয় হয়। তারা হোয়াটসঅ্যাপে তাদের যোগাযোগ রক্ষা করত।  এছাড়া অস্ত্র মামলায় কাশিমপুর কারাগারে থাকা আসামি মুন্নাও গ্রেফতারকৃত আসামিদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করত এবং নির্দেশনা দিত।
জিসান একাধিকবার বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে সোহানকে অস্ত্র সরবরাহ করেছে মর্মে সোহান স্বীকার করে। প্রথমদিকে  জীবন হোসেনের মাধ্যমে সন্ত্রাসী জিসান সোহানের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করলেও পরবর্তীতে সরাসরি সোহান সহ অন্যান্যদের সাথে জিসান যোগাযোগ রক্ষা করে। জিসান বিভিন্ন সময়ে ইমন, জীবন, সোহান, আসলামসহ অন্যদেরকে মামলায় হাজির হওয়াসহ অন্যান্য খরচ দেয়। 

এই ক্যাডাররা বিভিন্ন সময়ে চাঁদাবাজির টাকা তুলে মামুনকে দিয়েছে বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত পিচ্চি আসলাম ক্যাশিয়ার আসলাম ইতোমধ্যে অস্ত্র মামলায় ৯ বছর কারাগারে বন্দি ছিল।

এদিকে গ্রেফতারকৃত অন্যদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানায় পুলিশের এই কর্মকর্তা।

একুশে সংবাদ/এইচআই
 

Link copied!