জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পুনট ইউনিয়নের চাকলমুয়া গ্রামে বাবার সম্পত্তি নিয়ে দুই আপন ভাইয়ের দীর্ঘদিনের বিরোধ শেষ পর্যন্ত রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে আইল (সীমানা) দেওয়াকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় নারী-পুরুষসহ অন্তত ৯ জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহতদের মধ্যে রিনা খাতুন (৩০)-কে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন মৃত তায়েব উদ্দিন মন্ডলের দুই ছেলে—মতলেব হোসেন ও রেজাউল হোসেন এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা। মতলেবের দুই ছেলে একরামুল ও এনামুল হক, স্ত্রী রেবেকা বেগম, ছেলের স্ত্রী ছেলিনা খাতুন, ভাবী শায়েস্তা বিবি, ভাতিজা শামীম হোসেন ও মেয়ে রিনা খাতুনও সংঘর্ষে আহত হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয়রা জানান, খবর পেয়ে তারা দ্রুত মাঠে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
পরিবারের সদস্য ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাবার ২০ শতাংশ জমি নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। দুপুরে রেজাউল তার স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ওই জমিতে আইল দিতে যান। খবর পেয়ে বড় ভাই মতলেবও নিজের পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে ছুটে গিয়ে বাধা দেন। প্রথমে দুই ভাইয়ের মধ্যে কথাকাটাকাটি চলতে থাকলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই উত্তেজনা চরমে ওঠে। দুই পক্ষের ছেলেরা লাঠি, লোহার রড ও হাঁসুয়া নিয়ে একে অপরের ওপর হামলে পড়লে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
আহত এনামুল হক হাসপাতালে শয্যায় শুয়ে অভিযোগ করে বলেন,তাদের দাদার অংশ হিসেবে যে জমিটি তাদের দখলে ছিল সেটি জোর করে নিজের নামে নিতে চান রেজাউল।তিনি দাবি করেন, চাচা ও চাচার পরিবার পরিকল্পিতভাবে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে এবং তারা শিগগিরই আইনি ব্যবস্থা নেবেন।
অন্যদিকে রেজাউলের জামাই শরিফুল ইসলাম জানান, তার শ্বশুরের প্রাপ্য জমি বড় ভাই মতলেব দীর্ঘদিন ধরে জোরপূর্বক দখল করে রেখেছেন। এ বিষয়ে গ্রামে বহুবার সালিস হলেও কোনো সমাধান হয়নি। বুধবার জমিতে আইল দিতে গেলে মতলেব ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা হামলা চালান বলে তিনি অভিযোগ করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আফজাল হোসেন জানান,জমিকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের এই বিরোধ কমপক্ষে কয়েক বছর ধরে চলছে। বহুবার সালিস বৈঠক হলেও সমাধান হয়নি। আজকের সংঘর্ষে দুই পক্ষেরই বেশ কয়েকজন আহত হওয়ায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর ভাষায়, “এদের মধ্যে একজন মারা না যাওয়া পর্যন্ত বিরোধ মিটবে বলে মনে হয় না।
ঘটনার বিষয়ে কালাই থানার ওসি তদন্ত নিপেন্দ্রনাথ সিংহ জানান, এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থেকেই লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।অভিযোগ পেলেই পুলিশ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেবে।
একুেশ সংবাদ/ এমএইচ



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

