সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার চামরদানী ইউনিয়নের ধৌলতপুর মৌজার খাস খতিয়ানের ৯০ দাগে বন্দোবস্ত বাতিলের দাবি করছে রসুলপুর গ্রামের অর্ধশতাধিক পরিবার। এদিকে, টেপিরকোনা গ্রামের বিধবা রেখা আক্তারের নামে ৯০ দাগে দেড় একর জায়গায় ত্রিশ বছর আগে বন্দোবস্ত পেয়েছিলেন।
পরে ইউপি চেয়ারম্যান খসরুজ্জামান বাবলু স্থানীয় মুরুব্বিদের সঙ্গে গ্রামে ভূমিহীনদের জন্য ঐ ৯০ দাগে বসতি স্থাপন করেন, এবং পরে গড়ে ওঠে রসুলপুর গ্রাম। স্থানীয় মাতব্বরদের উদ্যোগে বন্দোবস্তপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে এবং আশপাশের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে মিলিয়ে এই গ্রামটির সূচনা হয়।
দীর্ঘদিন শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করলেও গত দুই বছর ধরে একই দাগের জমিতে একাধিক ব্যক্তির নামে সরকারী বন্দোবস্ত দেওয়ায় জটিলতা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দুই বছর আগে কিছু বন্দোবস্তপ্রাপ্ত ব্যক্তি হঠাৎ করেই তাদের দখলকৃত বসতবাড়ির সামনে বন্দোবস্তপ্রাপ্ত টেপিরকোনা গ্রামের মোছাঃ রেখা আক্তারের লোকজনকে পতিত জায়গায় স্থাপনা নির্মাণে উদ্যোগী করেন। পরে রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দারা স্থাপনা নির্মাণে বাধা দেন। এ নিয়ে কয়েক দফা উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় এবং এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মধ্যনগর থানায় পক্ষ-পক্ষের মধ্যে অভিযোগের লড়াই হয়। পরে পুলিশ ও প্রশাসন হস্তক্ষেপ করে দুই পক্ষের উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখেন এবং আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
এরপর গ্রামবাসীর পক্ষে মোঃ মজিবুর গংসহ কয়েকজন বাদী হয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের বরাবরে বন্দোবস্ত বাতিলের লিখিত আবেদন করেন। সম্প্রতি ভুক্তভোগী পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক উপজেলা সহকারী ভূমি কমিশনারকে সরেজমিনে তদন্তের দায়িত্ব দেন। তবে গত বছর বর্ষার আগমনে জায়গাটি পানিতে তলিয়ে যায়, ফলে তদন্ত বন্ধ থাকে। এবছর পানি শুকানোর পর গত মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর বিকেলে সরেজমিনে যান উপজেলা সার্ভেয়ার শাহিন আলম এবং মধ্যনগর ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা সারোয়ার আলম।
দখলকৃত এলাকার বাসিন্দা মজিবুর রহমান বলেন, “আমরা প্রায় ৩০ বছর ধরে এখানে বসবাস করছি। আগে কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু সম্প্রতি আমাদের গ্রামের মিলনের প্ররোচনায় কয়েকজন বন্দোবস্তপ্রাপ্ত ব্যক্তি আমাদের হয়রানি শুরু করেছে। আমরা তাদের বন্দোবস্ত বাতিল করে আমাদের মালিকানা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।”
অন্যদিকে, বন্দোবস্তপ্রাপ্ত রেখা আক্তার দাবি করেন, “তাদের বাড়ির জায়গায় আমার কোনো দাবি নেই। সামনের পতিত জমিটি আমার দখলে। অথচ তারা জোর করে আমাকে সেখান থেকে উচ্ছেদ করতে চাচ্ছে। আমার দাবি, সরকার আমাকে জায়গাটি বন্দোবস্ত দিয়েছে, তারা কেন আমার জায়গায় বাঁধা দিচ্ছে? তাদের কারণে আমি আদালতে মামলা করেছি।”
স্থানীয়রা বলছেন, এই গ্রামের জায়গা স্থায়ীভাবে সমাধান না হলে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন যেন বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করেন, গ্রামবাসীরা সেই দাবি জানিয়েছেন।
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

