লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) সংসদীয় আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী নাজমুল হাসান পাটোয়ারী বলেছেন, তিনি নির্বাচিত হলে উপজেলার সকল সরকারি অফিসে নাগরিকরা সম্মানজনক সেবা পাবেন। সেবা নিতে কাউকে ঘুষ দিতে হবে না, হয়রানির শিকারও হতে হবে না।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টায় সোনাপুর চৌরাস্তায় তার সমর্থনে “মার্চ ফর দাঁড়িপাল্লা” ব্যানারে আয়োজিত গণমিছিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “আজ আমাদের ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে। একটি জন্ম নিবন্ধনের জন্য দিনের পর দিন মানুষকে দাম দিতে হচ্ছে। কোটি টাকার ব্যয়ে নির্মিত ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক নেই; সঠিক চিকিৎসাও দেওয়া হয় না। এত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও সেগুলো কার্যত অকার্যকর। আল্লাহ যদি সুযোগ দেন, ইউনিয়ন পরিষদে নাগরিক হয়রানি বন্ধ করা হবে এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো আধুনিকায়ন করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “সরকার প্রতিবছর কৃষকদের জন্য কোটি টাকার কৃষি প্রণোদনা দেয়। কিন্তু তা কৃষকদের হাতে পৌঁছায় না। শুকনা মৌসুমে কৃষকেরা সেচের পানি পায় না। একটি গোষ্ঠী খাল দখল করে পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করেছে। সুযোগ পেলে কৃষি প্রণোদনা কৃষকের হাতে পৌঁছে দেব এবং খাল খননের মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে পানির ব্যবস্থা করব।”
নাজমুল হাসান পাটোয়ারী বলেন, “সুযোগ পেলে গ্রামের পারিবারিক বিরোধ বা সামাজিক অপরাধকে আর জিইয়ে রাখতে দেওয়া হবে না। তুচ্ছ বিষয়ে মামলা দেওয়া, থানায় দালালি—এসব বন্ধ করা হবে। মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি বাস্তবায়ন করা হবে। থানায় সেবা নিতে কাউকে মধ্যস্থতাকারীর দরকার হবে না, ঘুষ বা হয়রানিও সহ্য করা হবে না।”
তিনি আরও জানান, নির্বাচিত হলে ‘ওপেন হাউজ’ প্রথা চালু করবেন। এতে সরকারি বরাদ্দ, ইউনিয়ন পরিষদের কাজ, থানা-পুলিশ ও সরকারি হাসপাতালের সেবা—এসব বিষয়ে জনগণ ও গণমাধ্যম সরাসরি প্রশ্ন করতে পারবে।
তিনি বলেন, “আপনার রাস্তা, মসজিদ, মন্দিরসহ যে কোনো প্রকল্পে কত টাকা ব্যয় হয়েছে—আপনার জানার অধিকার থাকবে।”
রামগঞ্জে দৃশ্যমান কোনো বড় প্রকল্প না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “রামগঞ্জ ছাড়া আশপাশের উপজেলাগুলোতে গ্যাস সংযোগ আছে। সারাদেশে মাত্র পাঁচটি জেলায় রেলসংযোগ নেই—তার একটি আমাদের জেলা। এখানে নার্সিং ইনস্টিটিউট, মেডিকেল কলেজ, টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট নেই; সরকারি হাসপাতালের অবস্থাও নাজুক। আপনারা সুযোগ দিলে এগুলো বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।”
নিজেকে রামগঞ্জের সন্তান দাবি করে তিনি বলেন, “ঢাকায় আমার কোনো বাড়ি নেই, নিজস্ব গাড়িও নেই। আমি সবসময় আপনাদের সঙ্গে রামগঞ্জেই থাকি। নির্বাচিত হলেও এখানেই থাকব, আপনাদের মাঝে।”
গণমিছিলে উপস্থিত ছিলেন—লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মহসিন কবির মুরাদ, শ্রম বিভাগ সভাপতি মমিন উল্লাহ পাটোয়ারী, পৌর আমির অ্যাডভোকেট হাসান বান্না, নায়েবে আমির মাস্টার আবুল হোসেন, উপজেলা সেক্রেটারি ইমরান হোসাইন, পৌর সেক্রেটারি ইসমাইল ইলিয়াস, উপজেলা সহকারী সেক্রেটারি জাকির হোসেন পাটোয়ারী, মাস্টার ফয়সাল আহমেদসহ আরও অনেকে।
এ ছাড়াও রামগঞ্জ পৌরসভা ও ইউনিয়নগুলোর দশ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মী গণমিছিলে অংশ নেন।
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

