চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে বিদেশগামী নাগরিকদের নিরাপদ, আইনসম্মত ও ঝুঁকিহীন অভিবাসন নিশ্চিত করতে সিসিডিএ পরিচালিত ‘সিমস’ প্রকল্পের আওতায় LGI শীর্ষক বিশেষ সভা ও দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯ নভেম্বর দক্ষিণ গোবিন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত এ কার্যক্রমে ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি অভিবাসী পরিবারগুলোর জন্য টেকসই সহায়তা কাঠামো গড়ে তোলার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জনাব সেটু কুমার বড়ুয়া। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, “গ্রামের মানুষ বিদেশে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন, কিন্তু সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে অনেকেই প্রতারণার শিকার হন। ইউনিয়ন পরিষদই তাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ এবং বিশ্বস্ত তথ্যকেন্দ্র হতে পারে।” তিনি বিদেশগমনের আগে ভাষা শেখা, কারিগরি দক্ষতা অর্জন এবং সরকারি অনুমোদিত প্রক্রিয়া অনুসরণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন দক্ষিণ গোবিন্দপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন ভূঁইয়া। ইউনিয়নের নারী–পুরুষ সদস্যবৃন্দ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, উদ্যোক্তা, হিসাবরক্ষক এবং পরিষদের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা এতে অংশ নেন।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সিমস প্রকল্পের উপজেলা কো-অর্ডিনেটর মাহমুদুল হাসান এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করেন নিরাপদ অভিবাসন বিভাগের প্রজেক্ট অফিসার মোহাম্মদ শাহজাহান। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন পাভেল আল ইমরান। প্রশিক্ষণে বৈধ পাসপোর্ট–ভিসা যাচাই, মেডিক্যাল টেস্ট, সরকার অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সি নির্বাচন, দালাল চক্রের সাধারণ প্রতারণা কৌশল, কর্মসংস্থান দেশের আইনি কাঠামো এবং জরুরি পরিস্থিতিতে অভিবাসীদের সরকারি সহায়তা পাওয়ার উপায়—এসব বিষয়ে হাতে-কলমে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়।
প্রশিক্ষণে বিশেষ গুরুত্ব পায় রেমিট্যান্স ব্যবস্থাপনা ও পরিবারভিত্তিক আর্থিক পরিকল্পনা। পরিবারের সদস্যরা কীভাবে সঠিক আর্থিক সিদ্ধান্ত নেবে, সরকারি রেমিট্যান্স চ্যানেলে কীভাবে অর্থ পাঠানো যায়—এসব নিয়েও পরিষদের সদস্যরা নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
সিমস প্রকল্প জানুয়ারি ২০২৫ থেকে দক্ষিণ গোবিন্দপুর ইউনিয়নে নিরাপদ অভিবাসন, আইনগত সহায়তা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রকল্পের লক্ষ্য স্থানীয় পর্যায়ে অভিবাসন ব্যবস্থাপনাকে আরও প্রাতিষ্ঠানিক ও জনবান্ধব করে তোলা।
সভা শেষে ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিনিধিরা জনগণের আরও কাছাকাছি গিয়ে সেবা সম্প্রসারণের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তারা জানান, বিদেশগামীদের সহায়তায় সচেতনতা কর্মসূচি বাড়ানো হবে এবং বাড়ি–বাড়ি তথ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া হবে।
পরিষদ সদস্যবৃন্দের অনুমোদনে সপ্তাহে দু’দিন ইউনিয়ন পরিষদে “নিরাপদ অভিবাসন হেল্প ডেস্ক” চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়—যা অভিবাসনসংক্রান্ত তথ্য, আইনি পরামর্শ এবং সরকারি সেবার পথনির্দেশনা দেবে।
দিনব্যাপী এ সভা ও প্রশিক্ষণ জনপ্রতিনিধিদের দৃষ্টিভঙ্গি ও দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি অভিবাসী পরিবারগুলোর নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে বলে আয়োজকরা মনে করেন।
একুশে সংবাদ//এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

