গৌরীপুর উপজেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে শনিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে বিএনপির মহিলা সমাবেশে হামলা এবং কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই ছাত্রদলের ১৯ নেতাকর্মীকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন গৌরীপুর উপজেলা, পৌর, কলেজ ও ইউনিয়ন শাখা ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নিপন মিয়া।
নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন, ৯ নভেম্বর উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মহিলা সমাবেশটি ছিল শান্তিপূর্ণ ও ঐতিহাসিক আয়োজন, যেখানে তিন হাজারেরও বেশি নারী অংশ নেন। সমাবেশ শুরুর এক ঘণ্টা পর ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসেনের সমর্থিত একটি মিছিল থেকে স্থানীয় ও বহিরাগত কয়েকজন দুষ্কৃতকারী দেশীয়-বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অতর্কিতে হামলা চালায়।
হামলায় মা–শিশুসহ পঞ্চাশের বেশি নারী আহত হন। মঞ্চ, চেয়ার, মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। কয়েকটি মোটরসাইকেল চুরিও হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে ভাঙচুর চালিয়ে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবিও নষ্ট করা হয়। ঘটনাটির বিভিন্ন অংশ গণমাধ্যমে লাইভ প্রচারিত হয়।
নেতৃবৃন্দ আরও অভিযোগ করেন, হামলার পর একটি স্বাভাবিক মৃত্যুকে হত্যা হিসেবে প্রচার করে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়। তারা দাবি করেন, উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরুজ্জামান সোহেলের সহোদর ভাই মৃত ব্যক্তিকে নিজের ভাই দাবি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালান, যা পুরো জেলায় উত্তেজনা সৃষ্টি করে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঘটনার পরদিন ১০ নভেম্বর উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক এ কে এম সুজাউদ্দিন কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই ছাত্রদলের ১৯ নেতাকর্মীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেন। এ সিদ্ধান্তকে “অন্যায়, একতরফা ও অসাংগঠনিক” বলে উল্লেখ করেন নেতৃবৃন্দ। তাদের অভিযোগ— “মহিলা সমাবেশে আমাদের ৪-৫ জন স্বেচ্ছাসেবী ছাড়া কেউ উপস্থিত ছিলেন না। অথচ ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, জেলা ছাত্রদল সভাপতি নিজে সন্ত্রাসীদের নিয়ে হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।”
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, বহিষ্কারাদেশটি আর্থিক লেনদেন ও ব্যক্তিগত বিরোধের ফল। জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরুজ্জামান সোহেল নিজের ভূমিকা আড়াল করতেই সাধারণ নেতাকর্মীদের তড়িঘড়ি করে বহিষ্কার করেছেন বলে দাবি করেন তারা।
নেতৃবৃন্দ তিন দফা দাবি তুলে ধরেন—
১. বহিষ্কারাদেশ বাতিল করে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত।
২. মহিলা সমাবেশে হামলার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ।
৩. জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরুজ্জামান সোহেলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।
তারা আরও বলেন, “তদন্তে আমাদের কেউ দাঙ্গা–হামলায় জড়িত প্রমাণিত হলে আমরা যেকোনো শাস্তি মেনে নেব। কিন্তু অন্যায়ের বহিষ্কার মানি না, মানবো না।”
সংবাদ সম্মেলনে রিপন মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়কসহ বহিষ্কৃত নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
একুশে সংবাদ//এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

