বরগুনা জেলার চাঞ্চল্যকর পুলিশ সদস্যের বাবাকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় পলাতক এজাহারনামীয় অভিযুক্ত নিপু চৌকিদার (৩০)–কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৮ সিপিসি-১ পটুয়াখালী ক্যাম্প এবং র্যাব-১১ সদর কোম্পানি, নারায়ণগঞ্জের যৌথ আভিযানিক দল।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত আনুমানিক পৌনে নয়টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ সদর থানাধীন চাষাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিপুকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত নিপু বরগুনা সদর উপজেলার জাকিরতবক গ্রামের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছালাম চৌকিদারের ছেলে।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, অত্র মামলার বাদী মোসা. রাহিমা বেগম (৫২)। মামলার ১ নম্বর সাক্ষী ভিকটিম আরিফ বিল্লাহ পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর থানায় কর্মরত। অন্যদিকে বিবাদীরা বাদীর নিকটতম প্রতিবেশী। জমি-জমা ও মামলা-মোকদ্দমা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে পূর্ব থেকে বিরোধ চলে আসছিল।
সম্প্রতি মামলার ১ নম্বর বিবাদীর পিতা আবদুল ডাকাত ও তার ভাইসহ আবদুল ডাকাতের ছেলে আরিফ ডাকাতির অভিযোগে পুলিশের হাতে আটক হলে বিবাদীরা বাদীর ছেলে আরিফ বিল্লাহকে সন্দেহ করে। এছাড়া কয়েকদিন আগে ১ নম্বর বিবাদীর সহযোগী বাদশাকে পুলিশ আটক করলে তাতেও বিবাদীরা বাদীর দুই ছেলে ও স্বামীকে দায়ী করে।
উক্ত বিষয়সহ পূর্বের বিরোধের জেরে বিবাদীরা বাদীর ছেলে আরিফকে হত্যার পায়তারা করতে থাকে। বাদীর ছেলে আরিফ গত তিনদিন ধরে দিনে বরিশালে ট্রেনিং করে রাতে বাড়িতে যেতেন। তিনি বাড়িতে আছেন জানতে পেরে এজাহারনামীয় আসামিরা ও অজ্ঞাত ৪/৫ জন শর্টগান, পিস্তল, ধারালো দা, লোহার পাইপ ও লাঠিসোটা নিয়ে গত ১৬ অক্টোবর দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টার দিকে বাদীর বসতঘরে অনধিকার প্রবেশ করে। তারা ঘুম থেকে তুলে আরিফের ওপর এলোপাতাড়ি মারধর ও কোপানো শুরু করে। এ সময় ১ নম্বর বিবাদী আরিফ ধারালো দা দিয়ে আরিফের বুকের বাম পাশে কোপ দিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে আসামিরা তাদের কাছে থাকা পিস্তল ও শর্টগান দিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়।
এ ছাড়াও তারা বাদীর ছেলে রাব্বি ও স্বামী আ. রশিদ ফরাজীকে টেনে বাইরে এনে এলোপাতাড়িভাবে পিটিয়ে এবং গুলি করে গুরুতর জখম করে। এতে ভিকটিমদের বুক, পিঠ ও তলপেটে মারাত্মক আঘাত লাগে।
বাদী ডাকচিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে আসামিরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়।
আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে নিলে অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের বরিশালের শের-ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।
পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাদীর স্বামী আ. রশিদ ফরাজী মারা যান।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ//এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

