মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে পৌরসভার ময়লার ভাগাড় স্থানান্তরের দাবিতে ফের আন্দোলনে নেমেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রবিবার (৯ নভেম্বর) সকালে কলেজ রোডে ময়লার ভাগাড়ের সামনে বিশাল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেন শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ ও গাউছিয়া শফিকিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ‘এখানে ময়লা ফেলা বন্ধ করুন, নতুবা আমাদের মেরে ফেলুন’ শ্লোগান সম্বলিত ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল পরিচালনা করেন। শিক্ষার্থীরা জানান, ২০১৮ সাল থেকে তারা ময়লার ভাগাড় স্থানান্তরের জন্য মানববন্ধন, স্মারকলিপি ও প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়ে আসছেন। দীর্ঘ সাত বছর ধরে বাস্তবায়ন না হওয়ায় আবারও আন্দোলনে নেমেছেন তারা।
বক্তারা অভিযোগ করেন, ময়লার ভাগাড়ের দুর্গন্ধের কারণে তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী, শিক্ষক, পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দা ভোগান্তিতে রয়েছে। ভাগাড়ের চারপাশে ময়লার স্তুপ পাহাড়সম, মশা-মাছির উৎপাত ও দুর্গন্ধে পরিবেশ দূষণ ও জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে পড়েছে। পাশের আবাসিক এলাকা ও মসজিদেও এর প্রভাব পড়ছে।
স্থানীয়রা জানান, পৌরসভার ময়লাবাহী গাড়িগুলো অনিয়মিতভাবে ময়লা ফেলে চলে যাচ্ছে। শিক্ষার্থী ও পথচারীদের দুর্গন্ধে নাক চেপে সড়ক পার হতে হয়। ভাগাড়ের ময়লার মধ্যে প্লাস্টিক, বোতল, পলিথিন, কার্টুন ও পচা খাবার পড়ে, আগুনের ধোঁয়া চারিদিক ছড়িয়ে যাচ্ছে।
শ্রীমঙ্গল পৌরসভা ১৯৩৫ সালে ২.৫৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তন নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ ৯০ বছরে শহরের জনসংখ্যা ও বর্জ্য বৃদ্ধি পেলেও স্থায়ী ডাম্পিং স্টেশন এখনও গড়ে ওঠেনি। ২০১৭ সালে জেটি রোড এলাকায় ২.৪৩ একর জমি ক্রয় করা হয়েছিল নতুন ভাগাড়ের জন্য। তবে স্থানান্তরের কাজ আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে থমকে গেছে।
শ্রীমঙ্গল পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলাম জানান, জেটি রোডস্থ ২.৪৩৮৩ একর জমিতে স্যানেটারি ল্যান্ডফিল্ড এবং ফেকাল ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য ২১ কোটি ২৮ লাখ ৩০ হাজার টাকার প্রাক্কলন প্রস্তুত করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তবে প্রজেক্ট এখনও অনুমোদিত হয়নি।
পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন জানান, প্রজেক্ট অনুমোদন হলে দ্রুত ময়লার ভাগাড় স্থানান্তরের কাজ শুরু হবে। এটি বাস্তবায়ন হলে ৫০ হাজার পৌরবাসী এবং শহরতলীর জনসাধারণের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের মান উন্নত হবে।
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

