AB Bank
  • ঢাকা
  • রবিবার, ০৯ নভেম্বর, ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

মাদারগঞ্জে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থামাতে পারেনি মানিককে


Ekushey Sangbad
সাইফুল, মাদারগঞ্জ, জামালপুর
০৪:৫৭ পিএম, ৯ নভেম্বর, ২০২৫

মাদারগঞ্জে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থামাতে পারেনি মানিককে

জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার আদারভিটা ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের মো. মানিক। বয়স ১৯ বছর হলেও তার শরীর ও কণ্ঠস্বর এখনও শিশুর মতো। অনেকেই প্রথম দেখায় তাকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভেবে ভুল করেন। কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধকতা, দারিদ্র্য আর সামাজিক বিদ্রূপকে জয় করে মানিক এবার এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.২১ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

মানিক উপজেলার আদারভিটা ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের দিনমজুর রবিউল ইসলামের ছেলে।

জানা গেছে, ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় হঠাৎ মানিকের শারীরিক বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়। দরিদ্র বাবার পক্ষে উন্নত চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি। সময়ের সঙ্গে তার সমবয়সীরা যখন শারীরিকভাবে পরিণত হচ্ছিল, তখন মানিক রয়ে যান শিশুর মতো গঠনে। কণ্ঠেও কোনো পরিবর্তন আসেনি। এই ভিন্ন গঠন ও কণ্ঠের কারণে বন্ধু, শিক্ষক, আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের কাছ থেকে প্রায়ই উপহাস ও অবহেলার শিকার হয়েছেন তিনি।

তবুও থেমে থাকেননি মানিক। পশ্চিম পলিশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সমাপনী পরীক্ষা পাস করে ভর্তি হন পলিশা উচ্চ বিদ্যালয়ে। ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৩.০০ পান তিনি। পরবর্তীতে মির্জা আজম কলেজে ভর্তি হয়ে ২০২৫ সালে মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.২১ অর্জন করেন।

মানিক বলেন, “শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও আমি ভেঙে পড়িনি। লেখাপড়া চালিয়ে গেছি। আমি পরিবারের অবলম্বন হতে চাই। নিজের স্বপ্ন পূরণে সবার সহযোগিতা কামনা করছি। লেখাপড়ার পাশাপাশি যদি একটি কর্মসংস্থানের সুযোগ পেতাম, তাহলে আরও ভালো হতো।”

মানিকের বাবা রবিউল ইসলাম বলেন, “ছোটবেলায় মানিকের বৃদ্ধি স্বাভাবিকভাবেই হচ্ছিল। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় হঠাৎ তা বন্ধ হয়ে যায়। আর্থিক সমস্যার কারণে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারিনি। তবুও তাকে লেখাপড়ায় উৎসাহ দিয়েছি। আশা করি, কেউ যদি তার চিকিৎসার উদ্যোগ নেয়, তাহলে মানিক আরও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে।”

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম খালেক বলেন, “মানিকের গল্প সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। শারীরিক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও সে নিজের প্রচেষ্টায় এতদূর এসেছে—এটি প্রশংসার যোগ্য। আমরা তার বিষয়ে নিয়মিত খোঁজখবর রাখছি। সমাজসেবা অফিসের পক্ষ থেকে তাকে প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি যদি কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা তার উন্নত চিকিৎসায় সহযোগিতা করতে চান, তবে আমরা প্রশাসনিক সহায়তা দিতে প্রস্তুত।”

তিনি আরও বলেন, “মানিকের মতো তরুণরা সমাজে ইতিবাচক বার্তা দেয়—যে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকলেও মনোবল, অধ্যবসায় ও সাহস থাকলে সফলতা অর্জন সম্ভব।”

 

একুশে সংবাদ/এ.জে

সর্বোচ্চ পঠিত - সারাবাংলা

Link copied!