গাজীপুরের কালীগঞ্জে অত্যাধুনিক ইনডোর পাওয়ার গ্রিড নির্মাণ কাজ চলছে। বিদ্যুৎ সেবার মানোন্নয়নে সরকার এই আধুনিক গ্রিড নির্মাণ করছে, যার মাধ্যমে প্রায় পাঁচ লাখ গ্রাহক নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা পাবেন। উপজেলার বক্তারপুরের ফুলদী নলী ব্রিজ এলাকায় প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে অধিগ্রহণকৃত ১৮.০৫ একর জমিতে এ প্রকল্পের কাজ চলছে।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) পিএলসি’র অধীনে “ঢাকা ও পশ্চিমাঞ্চলীয় গ্রিড সঞ্চালন ব্যবস্থা সম্প্রসারণ প্রকল্প”-এর আওতায় ৪০০/২৩০ কেভি জিআইএস ইনডোর বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার, এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (AIIB) এবং পিজিসিবির যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ, নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত এবং দেশের সার্বিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রার অংশ হিসেবে এই উপকেন্দ্র নির্মাণ করছে সরকার।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, প্রকল্পের কাজ চলছে ধীরগতিতে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। জানতে চাইলে প্রকল্পের সিনিয়র সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. আক্তার হোসেন বলেন, “সাবস্ট্রাকচারের ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে, সুপারস্ট্রাকচারের কাজ চলছে। ঘোড়াশাল গ্রিড থেকে ২৩০ কেভি ভোল্টেজকে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ৪০০ কেভিতে রূপান্তর করে তা ট্রান্সমিশন পরবর্তী বিভিন্ন সংস্থার কাছে সরবরাহ করা হবে। আবহাওয়া ও টেকনিক্যাল কোনো জটিলতা না থাকলে আগামী বছরেই কাজ শেষ হবে।”
স্থানীয় শিক্ষক আবুল কালাম বলেন, “ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে আমরা ভীষণ ভুগছি। নতুন গ্রিড চালু হলে এ ভোগান্তি দূর হবে।” তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকল্প বাস্তবায়নে গড়িমসি করছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.টি.এম কামরুল ইসলাম বলেন, “মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বিদ্যুৎ অপরিহার্য। গ্রিডটি চালু হলে গ্রামীণ এলাকাতেও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পৌঁছাবে। শিক্ষা, কৃষি ও ক্ষুদ্র শিল্পে গতি ফিরবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।”
ঢাকা ও পশ্চিমাঞ্চল ট্রান্সমিশন গ্রিড সম্প্রসারণ ইনডোর পাওয়ার গ্রিড প্রকল্পের পরিচালক ও প্রধান প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম জানান, “কালীগঞ্জে ৫২০/৭৫০ এমভিএ ক্ষমতাসম্পন্ন উপকেন্দ্রের নির্মাণকাজ আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চলছে। কাজের গুণগত মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে জাতীয় গ্রিডের সক্ষমতা বাড়বে, বিদ্যুৎ বিভ্রাট কমবে এবং শিল্প-বাণিজ্য ও সামগ্রিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।”
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

