চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার শাকপুরা এলাকায় দিনরাত চলাচল করা ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের কারণে এলাকাটি এখন যানজটের শহরে পরিণত হয়েছে। শাকপুরার বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান, গুদাম ও কোম্পানির মালামাল আনা-নেওয়ার জন্য বড় বড় যানবাহন যেকোনো সময় রাস্তায় নামায়, যার ফলে সাধারণ মানুষের চলাচল চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সকাল-বিকেল তো বটেই, গভীর রাতেও এসব ভারী যানবাহন চলাচল করায় স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘুম হারাম হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকায় নিত্যদিন শতাধিক ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান যাতায়াত করে। সরু রাস্তা, ফুটপাত দখল ও ট্রাক দাঁড় করিয়ে মালামাল উঠানামার কারণে স্কুলগামী শিশু, অফিসগামী মানুষ ও জরুরি রোগীবাহী গাড়ি ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকে। এতে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
অভিযোগ রয়েছে, কিছু কোম্পানি ও ট্রাক চালক প্রশাসনের নজরদারি উপেক্ষা করে অনিয়মিত সময়েও মালামাল পরিবহন করে। রাস্তার পাশে অবৈধ পার্কিং ও ট্রাক টার্মিনালের অভাবও যানজটের অন্যতম কারণ।
এ অবস্থায় এলাকাবাসীর দাবি—শিল্পকারখানার পণ্য পরিবহনের জন্য নির্দিষ্ট সময়সূচি নির্ধারণ করা, ট্রাকের রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টার মধ্যে চলাচল সীমিত রাখা এবং বিকল্প রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া। নইলে শাকপুরার জনজীবন আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এই বিষয় নিয়ে বোয়ালখালী সচেতন নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক এম. আবুল ফয়েজ মামুন-এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "শাকপুরা এলাকার দীর্ঘদিনের যানজট এখন জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। বিশেষ করে এলাকায় অবস্থিত বিভিন্ন শিল্প-কারখানা ও কোম্পানির ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও ভারী যানবাহনের অনিয়ন্ত্রিত চলাচলের কারণে সকাল-বিকেল তো বটেই, রাতের বেলাতেও সাধারণ মানুষকে রাস্তায় নাকাল হতে হচ্ছে। শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, রোগী—সবার প্রতিদিন এই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এটি কেবল প্রশাসনিক অবহেলা নয়, এটি নাগরিক জীবনের প্রতি উদাসীনতার প্রতিফলন। এমন একটি এলাকায় যেখানে হাজারো মানুষ কর্মস্থল ও বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে, সেখানে প্রশাসনের পরিকল্পনাহীনতা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা মেনে নেওয়া যায় না।"
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, "স্থানীয় প্রশাসন ও সড়ক কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ের অভাবের কারণে শাকপুরার এই যানজট আজ একটি স্থায়ী সমস্যায় রূপ নিয়েছে। কিছু কোম্পানির স্বার্থে পুরো এলাকার মানুষকে কষ্ট ভোগ করতে হচ্ছে, যা কোনোভাবেই ন্যায়সঙ্গত নয়। জনগণের ভোগান্তি লাঘবের স্বার্থে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে গণআন্দোলনের মুখোমুখি হতে হবে।"
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

