দুই মাস ধরে সহকারি কমিশনার (ভূমি) পদ শূন্য থাকায় লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার হাজার হাজার মানুষ সেবার চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়ছেন। জমি বেচাকেনা, মিসকেস মামলার শুনানি, ভূমি উন্নয়নকরসহ বিভিন্ন সেবা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে এসিল্যান্ড না থাকায় ভূমি সংক্রান্ত সেবা থেকে চরম অসুবিধা হচ্ছে।
উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৮ আগস্ট এসিল্যান্ড দেবব্রত দাশ বদলি হয়ে যান। এর পর থেকে পদটি শূন্য রয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় গত ২৮ সেপ্টেম্বর চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) স্বরূপ মুহুরীকে অত্র উপজেলায় পদায়ন করেন। কিন্তু তিনি যোগদান করেননি। পরবর্তীতে চলতি মাসের ১৪ তারিখে সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ শহিদ উল্লাহকে পদায়ন করা হয়। তিনিও যোগদান করেননি, এবং তার আদেশ ১৬ অক্টোবর বাতিল হয়েছে।
বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাঈদ মোহাম্মদ রবিন শীষ ভূমি অফিসের অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন। তবে তাঁর একাধিক দায়িত্বের কারণে নামজারি সহ ভূমি সেবা কার্যক্রম পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়েছে। এছাড়া সেপ্টেম্বর মাস থেকে পদন্নোতি জনিত বদলির আদেশও রয়েছে।
পৌর জগতপুর গ্রামের কামাল হোসেন বলেন, “দুই মাস আগে নামজারির জন্য আবেদন করেছিলাম, এখনো কোন অগ্রগতি হয়নি। ৭–৮বার অফিসে আসছি, কিন্তু কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছে না কবে নাগাদ নামজারি সম্পন্ন হবে।”
এভাবে জসিম উদ্দিন, সাহিন আলম, মাসুদ আলমসহ ১০–১২ জন সেবা গ্রহিতা তাদের মেয়ে বিয়ে দিতে, ব্যবসা করতে বা দেনা পরিশোধ করতে জমি বেচাকেনার জন্য নামজারি, খাজনা সহ নানা সমস্যায় ভোগান্তির কথা জানিয়েছেন। শুধু সাধারণ জনগণই নয়, দলিল লেখকরাও ভূমি অফিসের সেবা বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছেন।
দলিল লেখক মাসুদ আলম বলেন, “প্রতিদিন রামগঞ্জ সাব-রেজিস্টার অফিসে প্রচুর জমি বেচাকেনা হয়। কিন্তু নামজারি, বাটোয়ারা এবং খাজনা পরিশোধ ছাড়া জমি রেজিস্ট্রি হয় না। এসিল্যান্ড না থাকায় সব কাজ আটকে আছে। ফলে আয়-রোজগারেও সমস্যা হচ্ছে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন উপজেলা ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক জানান, “এসিল্যান্ড না থাকায় কার্যক্রম স্থবির হয়ে গেছে। নামজারির জন্য প্রায় ১,১০০টি আবেদন জমা পড়ছে। প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে ফিরে যাচ্ছে।”
উপজেলা ভূমি অফিসের অধীনে ১১টি সহকারি ভূমি অফিস রয়েছে, যা সহকারি কমিশনার (ভূমি) দ্বারা পরিচালিত হয়। স্বাভাবিকভাবে দীর্ঘদিন ধরে এসিল্যান্ড না থাকায় এসব অফিসেও ভূমি সংক্রান্ত সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাঈদ মোহাম্মদ রবিন শীষ বলেন, “সহকারি কমিশনার (ভূমি) পদে অফিসার না থাকার বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। শীঘ্রই এই পদে পদায়ন করা হবে।”
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

