গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় চাঁদাবাজি ও প্রতারণা মামলার সাক্ষী ও তার ছেলের বিরুদ্ধে এক আসামির করা চুরির মামলা নিয়ে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
সম্প্রতি সাদুল্লাপুর থানায় আমিনুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির দায়ের করা চাঁদাবাজি মামলার অন্যতম আসামি মাছুম মিয়া বাদী হয়ে ওই মামলার সাক্ষী আশরাফ আলী ও তার ছেলের বিরুদ্ধে আদালতে চুরির মামলা দায়ের করেন।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের প্রতাপ গ্রামের মৃত বখতিয়ার উদ্দিনের ছেলে, নলডাঙ্গা জে.সি. বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. আমিনুল ইসলামের সঙ্গে তার বড় ভাই আব্দুল মান্নান ও তার ছেলেদের পারিবারিক বিরোধ দীর্ঘদিনের।
আমিনুল ইসলামের চাকরিজীবন চলাকালে ভাই ও ভাতিজারা বিভিন্ন অজুহাতে তার কাছ থেকে টাকা নিতেন। ২০২১ সালে অবসর গ্রহণের পর তিনি তার প্রাপ্য আর্থিক সুবিধা উত্তোলন করলে বড় ভাই ও ভাতিজারা ব্যবসার অজুহাতে চার লাখ টাকা ‘চাঁদা’ দাবি করেন। তিনি অস্বীকার করায় আমিনুল ইসলাম ও তার পরিবারকে প্রাণনাশ, বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া এবং পৈতৃক সম্পত্তি দখলের হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
নিরাপত্তার আশঙ্কায় তিনি পরিবারসহ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে রংপুরে ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন। এদিকে তার স্ত্রীর নামীয় ৩৮ শতাংশ জমি বড় ভাইয়ের পরিবার জোরপূর্বক দখল করে নেয় বলে দাবি করেন তিনি।
অবশেষে আমিনুল ইসলাম মাছুম ও তার ভাই মাহাফুজসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার অভিযোগে মামলা করেন। ওই মামলার অন্যতম সাক্ষী ছিলেন আশরাফ আলী।
আশরাফ আলীর পরিবারের অভিযোগ, এ কারণেই চাঁদাবাজি মামলার আসামি মাছুম সরকার প্রতিহিংসার বশে গত ২ সেপ্টেম্বর সাদুল্লাপুর আমলী আদালতে আশরাফ আলী ও তার ছেলের নামে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক চুরির মামলা করেন।
বিচারক মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেন সাদুল্লাপুর থানাকে। থানার উপসহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সুজন বলেন, “প্রাথমিক তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে, বিষয়টি আরও গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।”
চাঁদাবাজি মামলার বাদী আমিনুল ইসলাম বলেন, “আশরাফ আলী আমার মামলার অন্যতম সাক্ষী। শুধু এই কারণেই মাছুম সরকার তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। এটি প্রতিহিংসামূলক মামলা।”
এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, আশরাফ আলী ও তার ছেলের বিরুদ্ধে করা মামলা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, “মাছুম ও মাহাফুজ প্রায়ই সহজ-সরল মানুষদের ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকার দাবি করে।”
তবে বাদী মাছুম সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

