AB Bank
  • ঢাকা
  • রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

রাজশাহী সদর মিজানুর রহমান মিনুর বিকল্প খুঁজছে না নগরবাসী


Ekushey Sangbad
সারোয়ার হোসেন, তানোর, রাজশাহী
০১:৫৭ পিএম, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫

রাজশাহী সদর মিজানুর রহমান মিনুর বিকল্প খুঁজছে না নগরবাসী

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা না হলেও দেশব্যাপী বেজে উঠেছে নির্বাচনী ডামাডোল। আগামী ফেব্রুয়ারীতে হতে যাচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আর এই নির্বাচনকে ঘিরে দেশব্যাপী চলছে মুখরোচক আলোচনা। চলছে বিভিন্ন দলের প্রার্থী যাচাই-বাছাই। কে কোন আসনের এমপি প্রার্থী হচ্ছেন এ নিয়ে চলেছে বেশি আলোচনা।

সারা দেশের ন্যায় রাজশাহীর ৬টি সংসদীয় আসন নিয়ে চলছে নানান আলোচনা-সমালোচনা। তবে রাজশাহীর অন্যান্য আসনের চেয়ে মুল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে রাজশাহী-২ সদর আসন। ইতিমধ্যে জামায়াতে ইসলামী এ আসনে প্রার্থী চুড়ান্ত করেছে। আর বড় দল বিএনপিসহ অন্য দলের প্রার্থী এ আসনে এখনো মনোনিত হয়নি। এবার রাজশাহী সদর আসন থেকে বিএনপির সম্ভব্য যে ক’জন প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন বা প্রত্যাশা করছেন তাদের মধ্যে বিএনপির চেয়ারপার্সনের অন্যতম উপদেষ্ঠা, রাসিকের সাবেক মেয়র ও সদর আসনেরই সাবেক এমপি মিজানুর রহমান মিনুর বিকল্প দেখছে না নগরবাসী।

রাজশাহী নগরীর প্রবীণ রাজনীতিবীদ, সাধারণ ভোটাররা আবারো এ আসনে মিনুকেই দেখতে চান। এমন কি এ আসন থেকে বিএনপি, জামায়াত বা অন্য দলের যেসব প্রার্থীরা নির্বাচন করার কথা ভাবছেন তাদের মধ্যে প্রথমত সারিতে রয়েছেন মিজানুর রহমান মিনু নাম। এছাড়াও গোয়েন্দা বিভাগের জরিপেও জনসমর্থনের দিক থেকে প্রথম সারিতে রয়েছে মিজানুর রহমান মিনুর নাম।

জানা গেছে, ৩০টি ওয়ার্ড নিয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশন গঠিত। আর রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সীমানাকে ঘিরেই রাজশাহী-২ সদর আসনটি। রাজশাহীর সদর আসনকে ঘিরেই পুরো উত্তরাঞ্চলের রাজনীতির মেরুকরণ করা হয়। মূলত স্বাধীনতার পর থেকেই রাজশাহী বিএনপির ঘাটি হিসাবে পরিচিত। স্বাধীনতার পর থেকে বেশিরভাগ সময় রাজশাহী সদর আসন বিএনপির দখলে ছিল। মাঝখানে ১৭ বছর স্বৈরাচার হাসিনা সরকার দিনের ভোট রাতে করে তাদের শরিকদের এ আসনটি দিয়েছিল। স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনের পর আবারো এ আসনের সাধারণ মানুষ আশায় বুকবাঁধতে শুরু করেছেন। যে মানুষটি নগরবাসীর ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন, যে ছিল আশা-আকাঙ্খার প্রতিক, যার উন্নয়নে রাজশাহী নগরী পেয়েছিল প্রাণ, সেই মিজানুর রহমান মিনুর প্রতিক্ষায় আবারো দিনগুনছেন সদর আসনের মানুষ। নগরীর উত্তর থেকে দক্ষিন, পূর্ব থেকে পশ্চিম, চায়ের আড্ডা থেকে খোসগল্প, সবখানে মিজানুর রহমান মিনুকে নিয়ে চলছে আলোচনা।

নগরীর বহরমপুর মোড়ের রেল লাইনের পাশে সন্ধ্যে হলে বসে রমরমা চায়ের আড্ডা। চলে রাত ১১টা পর্যন্ত। এই চায়ের আড্ডায় দেখা যায় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। এ চায়ের আড্ডায় চলে দেশের রাজনৈতিক আলোচনা। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সেখানে দাঁড়াতেই শোনা যায় কে হচ্ছেন সদর আসনের এমপি। চলছে প্রার্থী নিয়ে মুখোরোচক আলোচনা। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন মিজানুর রহমান মিনু। তাদের আলোচনার মধ্যে কথা বলা হয় রিকশাচালক জহিরুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, গত ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর আমি আর ভোট কেন্দ্রে যাইনি। এরমধ্যে ২০১৮ সালে একবার ভোট কেন্দ্রে গিয়েও ভোট দিতে পারিনি। শুধু আমি নয়, আমার পরিবারে আত্মীয় স্বজন মিলে দেড়শটি ভোট রয়েছে। কেউ ভোট কেন্দ্রে যায়নি। তবে এবার যাবো।

তিনি বলেন, আমরা কোনো রাজনীতি করি না। তবে জানি উত্তরবঙ্গের একমাত্র নেতা মিজানুর রহমান মিনু। শুধু রাজশাহীতে নয়, মিনুর বিকল্প পুরো উত্তরাঞ্চলে নেই। পাশেই বসে ছিলেন, নগরীর এক স্বনামধন্য কলেজের প্রফেসর। নাম না জানানোর সর্তে বলেন, রাজশাহীতে একজনই নেতা রয়েছে যার সামনে জননেতা ব্যবহার করা যায়, সেটা হলো মিজানুর রহমান মিনু। কিন্তু বিগত দিনে দেখেছি রাজশাহীতে জননেতার অভাব ছিল না। বর্তমানও দেখা যাচ্ছে জনসমর্থন নেই অথচ তিনি জননেতা। জনসমর্থনহীন নেতাদের জন্য জনসমর্থিত জননেতারা হেয়পতিপন্ন হচ্ছেন, অসম্মানীত হচ্ছেন। তিনি বলেন, রাজশাহীর রুপকার যদি কাউকে বলা হয়, সে মিজানুর রহমান মিনু। তার বিকল্প নগরবাসী দেখেও না, খোঁজেও না।

গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে নগরীর আমচত্ত্বর এলাকার সদর আসনের এমপি প্রার্থী নিয়ে চায়ের দোকানে চলছিল আলোচনা। প্রায় ১৬জন ব্যক্তি চায়ের আড্ডায় এমপি প্রার্থী নিয়ে রীতিমত তর্কবিতর্ক শুরু করে দেন। প্রায় আধাঘণ্টাব্যাপী তর্কবিতর্ক চলার পর তারা এক মত হন। তারা নিজেরাই বলতে শুরু করেন রাজশাহীর নেতা একটাই, যার হাসি দেখলে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। তিনি হলেন মিজানুর রহমান মিনু।

কথা বলা হয় এই আড্ডার কেন্দ্র বিন্দুতে থাকা মাছ ব্যবসায়ী হাসিবের সাথে। তিনি বলেন, আমি লেখাপাড়া জানি না। তারপরও বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে দেখে আসছি রাজশাহীতে ফুলমন্ত্রী নেই। এবার বিএনপি সরকার গঠন করবে আমি নিশ্চিত। সেই সাথে এবার সদর আসনে আমরা মিজানুর রহমান মিনুকে চাই। মিনু ভাই এমপি হলে আমরা ফুলমন্ত্রী পাবো। আমাদের প্রত্যাশাও পূরণ হবে। আর যদি দল ভুল করে অন্য কাউকে দলীয় মনোনয়ন দেন তাহলে ভুল করবে। তিনি বলেন, মিজানুর রহমান মিনু যদি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে না পারেন, বিগত দিনে যেমন ভোট কেন্দ্রে যাইনি, আগামীতেও যাবো না।

সেখানে উপস্থিত এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার সর্তে বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মিজানুর রহমান মিনুকে দরকার। কারণ তিনিই এই নগরীকে শিক্ষা নগরী হিসাবে রুপ দিয়েছিলেন। কিন্তু গত ১৬ বছর এই শিক্ষা নগরীকে শেষ করে দেয়া হয়েছে। মিনু ভাই আবারো এমপি হলে শিক্ষা নগরীর ঐতিহ্য আবারো ফিরে আসবে।

বৃহস্পতিবার (২৩অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টায় নগরীর বিনোদপুর বাজারের ওভারব্রীজের নিচের চায়ের স্টলে চলছিল রাবি শিক্ষার্থীদের আড্ডা। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সেখানে শিক্ষক, সাধারণ মানুষও আড্ডা দেন। শিক্ষার্থীদের আড্ডার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল জাতীয় সংসদ নিবাচন। চলছিল সদর আসনের প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা।

কথা বলা হয় রাবি শিক্ষার্থী ইসমাত আরার সাথে। তার বাড়ি বিনোদপুরে। তিনি বলেন, আমরা নতুন প্রযন্ম। স্বৈরাচার হাসিনা সরকারকে তাড়াতে আন্দোলন করেছি। তাকে তাড়িয়েছি। আমরা আশা করি হাসিনা সরকারের মত যেনো আর কোনো সরকার না হয়। তিনি বলেন, ছোট থেকে মিজানুর রহমান মিনুকে দেখে এসেছি। তিনি মেয়র ছিলেন, এমপি ছিলেন। কিন্তু ওই সময়টা দেখিনি। তবে তার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ইতিহাস বাবা চাচাদের কাছে শুনেছি। সেই জায়গা থেকে আমি তরুণ ভোটার হিসাবে তিনি দলীয় মনোনয়ন পেলে তাকে ভোটটা দিবো। আমার পরিবার ও আশপাশের মানুষের কাছে মিজানুর রহমান মিনুর কথা শুনেছি। তারাও চায় এবার মিজানুর রহমান মিনুকে রাজশাহী সদর আসনে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হোক। তবে তিনি নির্বাচন না করলে আমার পরিবার ছাড়াও আমাদের মত অনেক পরিবার ভোটকেন্দ্রে যাবে না।

ঠাকুরগাঁয়ের বাসিন্দা রাবি শিক্ষার্থী, উম্মে কুলসুম বলেন, মিজানুর রহমান মিনু রাজশাহীর গর্ব। কিন্তু তার বিপরিতে রাজশাহীর বেশ কিছু বিএনপি নেতার নাম শোনা যায়। জনসমর্থন নেই কিন্তু তারা নাকি এমপি প্রার্থী। মিনুকে বাদ দিয়ে রাজশাহী সদর আসনে অন্য কাউকে দলীয় মনোনয়ন দিলে হবে বিএনপি বড় ভুল।

নগরীর পিএন স্কুলের সামনে প্রধান রাস্তার ঠিক পূর্ব পাশে রাস্তার ধারে রয়েছে বেশ কয়েকটি চা ও আলুপুরির দোকান। বিকেল থেকে এই জায়গায় লোকজনের আনাগোনা হয়। সন্ধ্যার পর স্থানীয়রা বসেন আড্ডায়। গত বুধবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় আড্ডা দিচ্ছিলেন কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তি। এরমধ্যে দুচারজন ছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক। আড্ডার সাথে গল্পের তালে তাদের মধ্যে চলছিল জাতীয় নির্বাচনী আলাপ। চলছিল বিগত ১৬ বছরে নগরীর উন্নয়নের হিসাব। তবে গল্পের বিষয়বস্তুর মধ্যে একটি বিষয় স্পষ্ট, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় রাজশাহী মহানগরীতে যে উন্নয়ন হয়েছে তার রোডম্যাপ নিয়ে। আর এই উন্নয়নের রোডম্যাপের কারিগর ছিলেন মিজানুর রহমান মিনু। এই উন্নয়নের ছক তিনি মেয়র ও এমপি থাকার সময় করে গিয়েছিলেন। যতটুকু উন্নয়ন হয়েছে মিজানুর রহমান মিনুর করা ছকে, তার বাইরে হয়নি।

এমনকি আওয়ামী লীগের মেয়র ও বা এমপিরা যে উন্নয়ন করেছেন, সেটাও নগর উন্নয়নের আগে নকশা করা ছিল, সে অনুযায়ী। কথা বলা হয় আড্ডার কেন্দ্র বিন্দুতে থাকা সুবির নামে প্রবীণ এক ব্যক্তির সাথে। তিনি বলেন, আমার বয়স এখন ৭০বছর। এই রাজশাহী নগরীকে নিয়ে, নগরীর মানুষকে নিয়ে কে কতটা ভেবেছেন বা ভাবেন সেটা আমি জানি। রাজশাহীর মূল উন্নয়ন যেটা, হয়েছে সেটা মিজানুর রহমান মিনুর সময়। আর চাকচিক্ক যেটা হয়েছে সেটা মেয়র লিটনের সময়। পেটে ভাত নেই অথচ দামি পোষাক পরণে। সাবেক মেয়র লিটন ও সাবেক এমপি ফজলে হোসেন বাদশার উন্নয়ন ঠিক এমনি।

তিনি বলেন, উন্নয়নে মানুষের ভালবাসা পাওয়া যায় না। ভালবাসা পাওয়া যায় আচরণে। মিজানুর রহমান মিনুই উত্তরাঞ্চলের একমাত্র নেতা, যে শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে এক কাতারে দাঁড়াতে পারেন। তার বিকল্প রাজশাহীবাসী কখনো ভাবে না, আর কোনো দিন ভাববেও না। সেখানে কথা হয় আরো কয়েকজন প্রবীণদের সাথে। তারা অন্যান্য দলের সমর্থক হলেও যোগ্য নেতা হিসাবে মিজানুর রহমান মিনু আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোয়ন পাওয়ার যোগ্য বলে উল্লেখ করেন। তবে নগরীর বিভিন্ন মোড়ে, আনাচে কানাচের চায়ের আড্ডাখানায় লোকজনদের সাথে কথা বলা হলে তারা একবাক্যে বলেন, রাজশাহী সদর আসনে মিজানুর রহজমান মিনুর বিকল্প নেই।

এদিকে কথা বলা হয় নগরীর বিশিষ্ঠজন, বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তি ও শিক্ষানুরাগীদের সাথে। কথা বলা হয় গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনের সাথে। গোয়েন্দা বিভাগের জরিপেও জনসমর্থের দিক থেকে প্রথম সারিতে যে নামটি রয়েছে তিনি মিজানুর রহমান মিনু। আর বিশিষ্ঠজনদের ভাবনায় রাজশাহীকে ঢেলে সাজাতে মিজানুর রহমান মিনুকে প্রয়োজন।

রাজনৈতিক ব্যক্তিরা বলছেন, মিজানুর রহমান মিনুকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া না হলে নির্বাচনে ৩০শতাংশ ভোট পড়বে না। কারণ দলের নেতদাকর্মী ছাড়াও মিজানুর রহমান মিনুকে নগরীর ৩০শতাংশ সাধারণ মানুষ ভালবাসেন। তিনি নির্বাচন না করলে এই ৩০শতাংশ ভোটার ভোট কেন্দ্রে যাবে না।

তাছাড়া মিজানুর রহমান মিনু সদর আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হলে ফুলমন্ত্রী হবেন। কারণ উত্তরাঞ্চলে ফুলমন্ত্রী হওয়ার মত একমাত্র মিনু ছাড়া আর কেউ নেই বলেও মনে করছেন তারা। শিক্ষানুরাগীদের বক্তব্য, শিক্ষার মান ফিরিয়ে আনতে মিজানুর রহমান মিনুকে নগরবাসীর প্রয়োজন। এই নগরীর বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তার হাতে তৈরি। তার সময়ে এই নগরী পেয়েছিল শিক্ষানগরীর খ্যাতি। সেই খ্যাতি এখন নেই। নগরবাসীর প্রত্যাশার জায়গা থেকেই মিজানুর রহমান মিনুকে প্রয়োজন।

 

একুশে সংবাদ/এ.জে

সর্বোচ্চ পঠিত - সারাবাংলা

Link copied!