নড়াইলের লোহাগড়ায় আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখলেন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. রবিউল ইসলাম।বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে লোহাগড়া থানা পুলিশের আয়োজনে থানার সম্মেলন কক্ষে সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নড়াইলের পুলিশ সুপার মো. রবিউল ইসলাম। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুশিক্ষায় গড়ে তুলতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো অবনতি হতে দেওয়া যাবে না। এজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সকলকেই সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “কোনো মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুলিশকে হয়রানি করবেন না। পুলিশ জনগণের পাশে থেকে সবসময় সহযোগিতা করবে। পুলিশ জনগণের বন্ধু—তাই কোনো দালাল ছাড়াই নির্ভয়ে পুলিশি সেবা গ্রহণ করুন।”
এসপি রবিউল ইসলাম মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সাইবার ক্রাইম, বাল্যবিবাহ, ইভটিজিংসহ সকল সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “যে-ই এসব অপরাধে জড়িত থাকুক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “ইতোমধ্যে দুটি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতারসহ ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে নড়াইল জেলা পুলিশ। অপরাধী যতই আড়ালে অপরাধ করুক না কেন, আইনের চোখে তা দিনের আলোর মতোই দৃশ্যমান।”
এ সময় পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম সবাইকে নিম্নলিখিত অপরাধ ও সামাজিক অসঙ্গতি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান—
১. আধিপত্য বিস্তার
২. গ্রাম্য কাইজ্যা
৩. দলীয় গ্রুপিং
৪. সামাজিক ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব
৫. মাদক
৬. জুয়া
৭. ইভটিজিং
৮. মানব পাচার
৯. নারী নির্যাতন ও বহুবিবাহ
১০. সামাজিক অবক্ষয়
১১. কিশোর অপরাধ ও দলবদ্ধ হয়ে আইন লঙ্ঘন
১২. বাল্যবিবাহ
তিনি আরও বলেন, “ধর্মীয় উস্কানি, অপপ্রচার বা প্রপাগান্ডা ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন। সংখ্যালঘু জনগণ যাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাসস্থান ত্যাগে বাধ্য না হয়, সেজন্য পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। কারো বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশ সুপার বলেন, “থানা হচ্ছে জনগণের আস্থার আশ্রয়স্থল। থানার প্রতি আস্থা রাখুন, থানায় এসে নির্ভয়ে পুলিশি সেবা গ্রহণ করুন।”
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন— মো. রকিবুল হাসান, বিপিএম (সেবা), পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস), নড়াইল; মো. শরিফুল ইসলাম, অফিসার ইনচার্জ, লোহাগড়া থানা;
অজিত কুমার রায়, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত), লোহাগড়া থানা; স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, নড়াইল জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা।
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

