পটুয়াখালীর দুমকিতে শহীদ জুলাই যোদ্ধার কন্যা কলেজছাত্রী লামিয়া ধর্ষণ মামলায় তিন কিশোর আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নীলুফার শিরিন বুধবার (২২ অক্টোবর) এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালত ইমরান মুন্সী (১৭) কে ১০ বছর, এবং সাকিব মুন্সী (১৭) ও সিফাত মুন্সী (১৬)-কে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ১০ বছর এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে আরও ৩ বছর করে মোট ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন।
তবে অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় শিশু আইনের অধীনে বিচার হয়, সর্বোচ্চ শাস্তি না হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছে লামিয়ার পরিবার। তাদের দাবি, “এই রায় লামিয়ার আত্মা শান্তি পাবে না। যারা আমাদের মেয়ে ধর্ষণ করে, ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়, তারা জেল খেটে আবার সমাজে ফিরে আসবে— এটা আমাদের জন্য দ্বিতীয় মৃত্যুর সমান।”
মামলার এজাহারে উল্লেখ, গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় দুমকি উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নে শহীদ জুলাই যোদ্ধার কন্যা কলেজছাত্রী লামিয়া বাবার কবর জিয়ারত শেষে নানাবাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথে তিন আসামি তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়, পরিত্যক্ত বাড়ির জঙ্গলে নিয়ে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে এবং ভিডিও ধারণ করে।
ঘটনার পর লামিয়ার পরিবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে। ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ আদালত এ রায় প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের পিপি এডভোকেট আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, “আদালত আইন অনুযায়ী রায় দিয়েছেন।
কিন্তু লামিয়ার পরিবার বলেন, “আইনকে আমরা সম্মান করি, কিন্তু এই রায় আমাদের সন্তুষ্ট করতে পারেনি। যারা আমার মেয়েকে অসম্মান করেছে, তারা আবার সমাজে চলাফেরা করবে— এটা মেনে নেওয়া যায় না। এটা শুধু লামিয়ার নয়, প্রতিটি মা-বোনের জন্য লজ্জাজনক রায়।
ঘটনার পর লামিয়া মানসিক যন্ত্রণা ও লোকলজ্জা সহ্য করতে না পেরে ঢাকায় মায়ের ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তার মৃত্যু শুধু এক তরুণীর নয়— এটি ন্যায়বিচারের প্রতীক্ষায় থাকা অসংখ্য নারীর নীরব আর্তনাদ।
একুশে সংবাদ/এ.জে
