AB Bank
  • ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

সিরাজগঞ্জে ট্রাফিক অব্যবস্থাপনা জনদুর্ভোগ চরমে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব


Ekushey Sangbad
মো. দিল, সিরাজগঞ্জ
০৫:৩৩ পিএম, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫

সিরাজগঞ্জে ট্রাফিক অব্যবস্থাপনা জনদুর্ভোগ চরমে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব

সিরাজগঞ্জে ট্রাফিক বিভাগের কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে, যা সাধারণ মানুষের জীবনে ডেকে আনছে ভয়াবহ দুর্ভোগ। মহাসড়ক থেকে শুরু করে শহরের অলিগলি, সর্বত্রই ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের মহোৎসব চললেও ট্রাফিকের ভূমিকা যেন কচ্ছপ গতির। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা, বাড়ছে প্রাণহানি ও পঙ্গুত্বের হার। এর পাশাপাশি ট্রাফিক আইন প্রয়োগে শিথিলতার কারণে সরকার হারাচ্ছে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব।

অভিযোগ উঠেছে, সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগে পুলিশ পরিদর্শক (টিআই) হিসেবে মোঃ মোফাকখারুল ইসলাম যোগদানের পর থেকেই এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর নেতৃত্বে ট্রাফিক বিভাগের কার্যক্রম এক প্রকার ভেঙে পড়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে আগের মতো ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতা এখন আর চোখে পড়ে না।

পরিসংখ্যান বলছে, ট্রাফিক আইন প্রয়োগের চিত্র হতাশাজনক। সিরাজগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, যে ৬ জন কর্মকর্তার মামলা দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে, তারা দিনে গড়ে মাত্র দেড়টি করে মামলা দিচ্ছেন। অথচ শুধুমাত্র সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশন এবং কদমফোয়ারা এলাকাতেই প্রতি মিনিটে গড়ে ৩০ জন ব্যক্তি ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করছেন।

গত তিন মাসের মামলার হিসাব এই স্থবিরতার চিত্রকে আরও স্পষ্ট করে তোলে। জুলাই মাসে যেখানে ৪৬৮টি মামলায় ২৪ লক্ষ ৬৪ হাজার ৫০০ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছিল, সেখানে আগস্ট মাসে তা কমে দাঁড়ায় ৩৬৭টি মামলায় ১৬ লক্ষ ৪০০ টাকায়। সেপ্টেম্বরে এই সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে অর্ধেকে নেমে এসেছে। মাত্র ২৯১টি মামলা থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫৭৫ টাকা, যা পূর্ববর্তী কর্মকর্তাদের সময়ের তুলনায় অর্ধেক। এই পরিসংখ্যানই প্রমাণ করে, ট্রাফিক কার্যক্রমের ধীরগতির কারণে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

কার্যক্রমের এই বেহাল দশার পেছনে বেশ কিছু কারণ বিদ্যমান। প্রায় এক বছর আগে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কড্ডার মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের কার্যালয়টি পুড়ে গেলেও এখন পর্যন্ত সেখানে কোনো কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি। এই বিষয়ে স্বয়ং টিআই মোঃ মোফাকখারুল ইসলামও কড্ডার মোড়ে কার্যক্রম শুরু করতে না পারা এবং মামলার সংখ্যা কমে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রাফিক পুলিশ সদস্য জানান, টিআই মোফাকখারুল ইসলাম অসুস্থ থাকায় আগের মতো কাজের প্রতি মনোযোগ দিতে পারছেন না এবং মামলা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন চাপের কারণে ঝামেলায় জড়াতে চান না।

এই অব্যবস্থাপনার সরাসরি শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সমাজসেবক ডাঃ সামিউর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ট্রাফিক পুলিশের সামনে দিয়েই হেলমেট ছাড়া তিনজন মোটরসাইকেলে চলে গেলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয় না। দেখেও না দেখার ভান করে থাকে।

ট্রাফিক বিভাগের এই দায়িত্বহীনতা একদিকে যেমন সড়ককে অনিরাপদ করে তুলেছে, তেমনই অন্যদিকে সরকারের রাজস্ব ক্ষতির একটি বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা এখন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার ফলে অকালে ঝরে যাচ্ছে বহু প্রাণ, বহু পরিবারকে আজীবনের জন্য পঙ্গুত্বের অভিশাপ বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের এখনই জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করে সিরাজগঞ্জের ট্রাফিক ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং সরকারের রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।

সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক হোসেন বলেন, ট্রাফিক বিভাগের সকল অনিয়ম খতিয়ে দেখা হবে। কিভাবে তাদের কার্যক্রম আরও কার্যকর ও জোরদার করা যায়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অনিয়ম বা গাফিলতি কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।

একুশে সংবাদ//র.ন

সর্বোচ্চ পঠিত - সারাবাংলা

Link copied!